সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তাঁর দল ক্ষমতায় এলে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর্থিক বাজারের সঙ্গে যুক্ত সব স্টেকহোল্ডার ও রেগুলেটরের মধ্যে সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা হবে। আস্থার পরিবেশ তৈরি হলে বাজারে নতুন নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়বে।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘পুঁজিবাজার পুনর্গঠন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইআরএফ ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) যৌথভাবে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী, ফ্রন্টিয়ার মার্কেট ফান্ড ও এমার্জিং ফান্ড বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী। কিন্তু বাজারের আকার ও পরিবেশকে অনুকূল মনে করছে না বলে এসব বিনিয়োগ আসছে না। পরিবেশ তৈরি হলে বাজারে পর্যাপ্ত বিদেশী বিনিয়োগ আসতে পারে।ব্যাংক লোন।
আরও পড়ুনঃ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির সঙ্গে দেশের নির্বাচনের সম্পর্ক নেই: আমীর খসরু
তিনি আরও বলেন, সরকার মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তার জন্য আইএমএফের পেছনে ঘুরছে। তাদের দেওয়া কঠিন কঠছিন শর্ত মেনে নিতে হচ্ছে। অথচ পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো গেলে সহজেই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আনা সম্ভব।
আমীর খসরু বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর অতিনিয়ন্ত্রণ এবং শক্তিশালী স্বনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা সরকারে গেলে অনেক দায়িত্ব ট্রেড বডিগুলোর উপর ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে এর জন্য সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করতে তিনি অর্থনীতির ‘গণতন্ত্রায়ণ’-এর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিএনপি নেতা বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের অগ্রসরমান অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন না এলে কোনো বড় ধরনের সংস্কার সম্ভব নয়।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বিষয়ে বিএনপির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে আমির খসরু বলেন, “আমরা যদি ক্ষমতায় যাই, আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—অর্থনীতি এবং পুঁজিবাজারকে আরও শক্তিশালী করব।”
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালার সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) সভাপতি গোলাম সামদানী ভূইয়া।ব্যাংক লোন
ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, রেগুলেশনকে আরও বাজারমুখি করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাজার কখনোই রিলেভ্যান্ট ভূমিকা পালন করতে পারেন নাই। দেশের অর্থনৈতিক কোন সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার থাকেনা। তবে এই অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।
সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বাজারে নতুন কোন ভালো শেয়ার নেই। গত ৯ মাসে মাত্র ১ টা কোম্পানি বাজারে এসেছে। এছাড়াও বিগত সরকারের কয়েক বছরে যে পরিমাণ কোম্পানি বাজারে এসেছে তা যথেষ্ট নয়। এরপরেও বাজারের উন্নয়ন হয়েছিলো। যেটুকু হয়েছিলো তা নানা ভাবে মেনিপুলেশনের মাধ্যমে নষ্ট করা হয়েছে।
সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূইয়া বলেন, পুঁজিবাজার থেকে দেশের শিল্পের বিকাশ হওয়ার কথা ছিলো। তা তো হয়নি বরং অনেক মানুষ এই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে সবকিছু হারিয়েছে। বিগত সরকারের সময়ে এই বাজারকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগিয়েছে অনেকে।
ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বাজারকে নিয়ে দায়িত্বশীল তথ্য প্রদান করেন৷বাজার এখন ভালোর দিকে। তাই বাজারকে প্রায়োরিটিতে রেখে ভালো শেয়ার আনতে হবে এবং বাজারে যেন কারসাজি না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
ধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ