দাঁত নেই এমন পশু কোরবানি করা যাবে?

কোরবানির গুরুত্ব নিয়ে পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা হালাল পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই কবুল হয় না, তবে আমার কাছে পৌঁছায় একমাত্র তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)

একদা জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানি কী? উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, কোরবানি হচ্ছে তোমাদের আদি পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনাদর্শ। সাহাবি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোরবানির ফজিলত কী? রাসুল (সা.) বললেন, পশুর পশমের পরিবর্তে একেকটি করে নেকি দেওয়া হয়।’ (মিশকাত, হাদিস : ১২৯)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই কোরবানিদাতার কোরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং তার অতীতের সব গুনাহ মোচন করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮০)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির দিন আল্লাহর কাছে কোরবানি অপেক্ষা উত্তম কোনো আমল আর নেই।’ (মিশকাত, হাদিস : ১৯৩৭)

বিশিষ্ট সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) পবিত্র মদিনায় দশ বছর জীবনযাপন করেছেন, প্রত্যেক বছরই তিনি পশু কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮৯)

কোরবানির জন্য সুস্থ-সবল পশু নির্ধারণ জরুরি। যদি কোনো পশুর অধিকাংশ দাঁত না থাকে তাহলে সেই পশু কোরবানি করা যাবে কিনা? এমন প্রশ্নে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন—

কোরবানির জন্য নির্ধারণ করা গরু-ছাগলের অধিকাংশ দাঁত না থাকলেও যে কয়টি দাঁত আছে তা দিয়ে যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তবে সেই পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে। কিন্তু দাঁত পড়ে যাওয়ার কারণে যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে না পারে তবে ওই পশু কোরবানি করা যাবে না।

(বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫; ফাতাওয়া আলমগীরী ৫/২৯৮)