দিনে কয়টি ডিম খাওয়া নিরাপদ?

ডিম খুবই পুষ্টিকর খাবার। এ কারণে প্রায় অনেকেই এটি খাদ্যতালিকায় রেখে থাকেন। ডিম এমন একটি খাবার, যা সহজলভ্য, স্বাদের দিক থেকেও সেরা এবং পুষ্টি গুণাগুণ তো রয়েছেই। বিশেষ করে প্রোটিনের উৎস হিসেবে ডিমের তুলনা হয় না।

ডিমে রকমাররি পুষ্টি উপাদান থাকায় অনেকেই একসঙ্গে বা সারাদিনে কয়েকটি ডিম খেয়ে ফেলেন। এ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। কারও মতে দিনে একটি খাওয়া ভালো, আবার কারও মতে বেশি খেলে সমস্যা নেই। এ নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ প্রকাশ কদম। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

ডিমের পুষ্টি উপাদান:
১টি মাঝারি আকারের ডিমে প্রোটিন থাকে ৬-৭ গ্রাম, কোলেস্টেরল ১৮৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১২, ডি, এ ও কোলিন থাকে। আবার চোখের যত্নে কার্যকর লুটিন ও জিয়্যাক্সানথিন, মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের জন্য উপকারী ওমেগা-৩ (বিশেষ করে ডিএইচএ) উপাদান থাকে।

দিনে কয়টি ডিম খাওয়া নিরাপদ:
প্রতিদিন ১-৩টি ডিম খাওয়া একদম নিরাপদ। অর্থাৎ ১৮-২১ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা যায়। যা একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রোটিন চাহিদার বিশাল একটি অংশ পূরণ করে। তবে আপনার কোলেস্টেরল বা হৃদরোগজনিত সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

দিনে বেশি ডিম খাওয়া কি ক্ষতিকর:
কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা: একটি ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। দিনে তিনটি ডিম খাওয়া হলে হার্ট অ্যাটাক বা ব্লকেজের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের কোলেস্টেরল আগে হাই ছিল, তাদের এই ঝুঁকি থাকে।

কিডনির ওপর চাপ পড়ার সম্ভাবনা: অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ দীর্ঘমেয়াদে কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ করে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা না হয়।

বদহজম ও গ্যাস: অনেকেরই ডিম খাওয়ার পর পেট ফাঁপা, ঢেকুর ও গ্যাসের সমস্যা দেখা যায়। এ জন্য ডিম খাওয়ার আগে তাদের সতর্কতার কথা বলা হয়।

ডিম খাওয়ার উপায়:
সেদ্ধ ডিম: সবচেয়ে ভালো হয় সেদ্ধ ডিম খাওয়া হলে। এতে ক্যালোরি ও কোলেস্টেরল কম থাকে।

অল্প তেলে পোচ বা স্ক্র্যাম্বলড: ভাজা ডিমে ট্রান্সফ্যাট ও কোলেস্টেরল বেশি হয়ে থাকে। তবে চাইলে অল্প তেলে ডিম পোচ করে খেতে পারেন। আর সবচেয়ে ভালো হয় সকালের নাশতায় সেদ্ধ ডিম খাওয়া হলে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
সাধারণত একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দিনে ১-২টা ডিম খেতে পারেন। যারা শরীরচর্চা বা পেশী গঠনের চেষ্টা করছেন, তারা দিনে ৩টি পর্যন্ত ডিম খেতে পারেন। ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, কিডননিজনিত রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযয়ী চলতে হবে।

ডিমের বিকল্প:
ডিম ছাড়া প্রোটিনের জন্য মুরগির মাংস, টুনা মাছ, ডাল ও ছোলা, দুধ ও দই এবং বাদাম ও বীজ খেতে পারেন।

সতর্কতা:
ডিম হচ্ছে স্বাস্থ্যকর প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু এটি খাওয়ার সময় অবশ্যই বুঝে খাওয়া উচিত। একজন সুস্থ মানুষ দিনে ১-৩টি ডিম খেতে পারেন। কিন্তু সবসময় খেয়াল রাখতে হবে, দৈনিক খাদ্যতালিকায় যেন ভারসাম্য বজায় থাকে।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ