#ভ্যাট কমানোর দাবি মালিকদের
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের কারণে গত দেড় বছরে প্লাস্টিক শিল্পের ৬ হাজার কারখানার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি সামিম আহমেদ।
তিনি বলেন, এই ২০ শতাংশের মধ্যে অধিকাংশই বন্ধ হয়ে গেছে, আরো অনেকগুলো বন্ধের পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় শিল্পের বিকাশে প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার ও গৃহস্থালি সামগ্রীর ওপর ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিকপণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতি। তবে বিপিজিএমইএর অভিযোগ, প্রস্তাবিত বাজেটে প্লাস্টিক খাতের জন্য করা গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো উপেক্ষিত তথা বিবেচনা করা হয়নি।
আজ বুধবার দুপুরে পল্টনে সংগঠনের নিজ কার্যালয়ে বাজেট পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি সামীম আহমেদ। এতে বিপিজিএমইএ সাবেক সভাপতি এ এস এম কামাল উদ্দিন, ফেরদৌস ওয়াহেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন, মোঃ এনামুল হক, পরিচালক নুর আলম আলম বাচ্চু, এটিএম সাঈদুর রহমান বুলবুল, আমান উল্লাহ, আব্দুল কাদের জিলানি, সৈয়দ মোঃ নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
আরও পড়ুনঃ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত শিল্প ধ্বংসের চক্রান্ত: বিপিজিএমইএ
শামিম আহমেদ বলেন, গৃহস্থালি প্লাস্টিকপণ্যে আগে ভ্যাট ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। সেখান থেকে এই বাজেটে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এটা ৫ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্লাস্টিক খেলনাশিল্পের সব মিলিয়ে ৮৭ শতাংশের বেশি শুল্ক-কর আদায় করা হচ্ছে। এটা কমানোর দাবি করছি। খাতটি উদীয়মান শিল্প, এখানে নতুন নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে।
বিপিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমাদের শিল্প কোভিড-১৯ সময়ে ক্ষতির মুখে পড়েছিল। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীনও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। এখন নতুন করে কোভিড আবার শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ আরও শঙ্কা তৈরি করেছে। যুদ্ধের ফলে এলএনজিসহ অন্যান্য কাঁচামাল আমদানির খরচ বাড়বে, এতে আবারও ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের প্লাস্টিক খাত। তিনি বলেন, প্লাস্টিক শিল্প বর্তমানে দেশের একটি সম্ভাবনাময় খাত। এই খাতে দক্ষতা ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যন্ত্রপাতি ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। অথচ শুল্ক ও ভ্যাট জটিলতার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন যন্ত্রপাতি আমদানিতে নিরুৎসাহিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য সংহঠনের পক্ষ থেকে ১৫টি সংশোধিত প্রস্তাব তুলে ধরে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে বিপিজিএমইএ’র ৮টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উপেক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে টেক্সটাইল খাতের সংগঠনগুলোর (বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিএলএমইএ, বিটিটিএলএমইএ, বিটিডিপিএ) সদস্যরা এসআরও নং-১২০-আইন/২০২১/০৯/কাস্টমস অনুযায়ী মাত্র ১ শতাংশ শুল্কে যন্ত্রপাতি আমদানির পাশাপাশি মূসক ও অন্যান্য শুল্ক থেকেও ছাড় পাচ্ছে। বিপিজিএমইএ বলছে, প্লাস্টিক শিল্প একই সুবিধা পেলে এ খাত আরও দ্রুত বিকশিত হবে এবং দেশের রপ্তানি আয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, বিগত ১০ বছর যাবৎ বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। এমতাবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারকে বাজেট বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। সরকারকে তাই ভ্যাট/ট্যাক্স নেটওয়ার্ক বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। বিপিজিএমইএ মনে করে- কর ব্যবস্থাকে ব্যবসাবান্ধব করার পাশাপাশি করযোগ্য বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত সকল ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে আয়কর এবং মূসকের আওতায় আনার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন বাণিজ্য ও পেশাজীবি সংগঠন এবং লাইসেন্স ও নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করা প্রয়োজন।
সংগঠনের সহসভাপতি এনামুল হক বলেন, ‘গাজীপুরে আমার কারখানায় দিনে ৮ থেকে ১০ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। অথচ আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে একটি মেশিন গরম হতে। বিল বাড়ছে, কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-গ্যাস দেয়া হচ্ছে না।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।