নতুন অধ্যাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকে কাঠামোগত যেসব পরিবর্তন এল

গ্রামীণ ব্যাংক আইন, ২০১৩ সংশোধন করে গ্রামীণ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেট প্রকাশ হয়েছে সোমবার। নতুন অধ্যাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের পর্ষদ গঠনে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। সরকার তার মালিকানা ২৫ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে এনেছে। অন্যদিকে, ঋণগ্রহীতাদের (শেয়ারহোল্ডার) মালিকানা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ব্যাংকের এমডির বয়স বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকটির ১৩ সদস্যবিশিষ্ট নতুন পরিচালনা পর্ষদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যিনি গ্রামীণ অর্থনীতি কিংবা নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হবেন অথবা এসব বিষয়ে গবেষণায় অভিজ্ঞ হবেন। তিনি হবেন গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ডের একজন মনোনীত পরিচালক।

নতুন অধ্যাদেশে পর্ষদের বাকি দুটি মনোনীত পদের একটি নির্ধারিত হয়েছে নারী সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদের (সিএ) জন্য এবং অন্যটি একজন নারী অধিকারবিষয়ক গবেষক বা আইনজীবী কিংবা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নারী নেত্রীর জন্য। এ তিন মনোনীত পরিচালককে মনোনয়ন দেবেন বাকি নয়জন নির্বাচিত পরিচালক, যারা সবাই গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণগ্রহীতা (শেয়ারহোল্ডার)। আরেকটি পদে সরকার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একজন পরিচালক নিয়োগ দেবে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে সরকারের সদস্য বা পরিচালক ছিলেন এতদিন তিনজন।

নতুন অধ্যাদেশে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন পর্ষদ সদস্যদের মধ্য থেকে। এমনকি দায়িত্বে অক্ষম হলে চেয়ারম্যানের স্থলাভিষিক্ত কাউকে মনোনয়নের ক্ষমতাও থাকছে না সরকারের হাতে। পর্ষদ সদস্যদের এ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। নতুন আইন অনুসারে, ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকার ৯০ শতাংশ মালিকানা এখন ঋণগ্রহীতা বা শেয়ারহোল্ডারদের হাতে যাবে, যেটি এতদিন ছিল ৭৫ শতাংশ। আর সরকারের অংশীদারত্ব নেমে আসবে ১০ শতাংশে, যা আগে ছিল ২৫ শতাংশ।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, পরিচালকদের মেয়াদ আগেও তিন বছর ছিল, এখনো তা-ই আছে। একজন পরিচালক পরপর দুই মেয়াদে পরিচালক থাকতে পারবেন। তিন বছরের বিরতি দিয়ে আবার তাদের পরিচালক হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। অধ্যাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির বয়সও সর্বোচ্চ ৬৫ বছর করা হয়েছে, এতদিন যা ছিল ৬০ বছর।