নতুন নোটে ভোগান্তি কাটছে না

নতুন নকশার নোট

ঈদুল আজহার ঠিক আগে বাজারে ছাড়া নতুন ডিজাইনের এক হাজার টাকার নোট নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাথমিকভাবে ২০, ৫০ ও এক হাজার টাকার প্রায় ২৫০ কোটি টাকার নতুন নোট ইস্যু করে। তবে প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল প্রস্তুতি ও সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) এবং এটিএম বুথে এই নতুন নোট গ্রহণ করছে না মেশিনগুলো। এতে ব্যাংক গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।

নতুন নোট সিআরএম বুথে জমা দিতে গিয়ে বারবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, টেকনিক্যাল সমন্বয় প্রক্রিয়া চলছে।

আরও পড়ুন:নতুন নোটে ফুটে উঠেছে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, মেশিনের সফটওয়্যারে নতুন নোটের ফিচার ইনপুট দিতে হয়। দেশের ব্যাংকগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন কোম্পানির মেশিন ব্যবহার করে। এজন্য মেশিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় এই সফটওয়্যার আপডেট ও প্রোগ্রামিংয়ের কাজ চলছে।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, নতুন নোটকে মেশিনে গ্রহণযোগ্য করতে সাধারণত দুই মাসের মতো সময় লাগে। এজন্য মেশিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর (যেমন: হিটাচি, এনসিআর ইত্যাদি) কাছ থেকে ‘টেমপ্লেট’ তৈরি করে মেশিনে আপলোড করতে হয়। এতে নোটের ডিজাইন, নিরাপত্তা ফিচার, সাইজ, ওজন, জলছাপ ও রংসহ প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়।

সিটি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. অরূপ হায়দার বলেন, “ঈদের আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সীমিত আকারে নতুন নোট ছাড়া হবে এবং এটিএম বা সিআরএম বুথে না দেওয়ার অনুরোধও করা হয়। কারণ নতুন নোটের ফিচার অ্যাডজাস্ট করতে জুন পর্যন্ত সময় লাগবে। বর্তমানে এই কাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। আশা করা যায়, জুলাইয়ের মাঝামাঝি বা শেষে এ সমস্যার সমাধান হবে।”

তিনি আরও জানান, “মেশিনে নতুন নোট গ্রহণের জন্য ‘ক্যালিব্রেশন’ করতে হয়। এতে সময় লাগে। বর্তমানে বড় তিনটি ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি এ নিয়ে কাজ করছে। সমাধান হলে ওই ভেন্ডরের আওতাধীন সব ব্যাংকের মেশিনেই একসঙ্গে কাজ করবে।”

এদিকে এটিএম ও সিআরএম মেশিনে টাকা জমা ও উত্তোলনের সময় নোটের সাইজ, পুরুত্ব, ময়লা কিংবা সামান্য ভিন্নতাও মেশিনের সাড়া না দেওয়ার কারণ হতে পারে। ব্যাংকগুলো জানায়, বিষয়টি সমাধানে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, নতুন নোটের কারণে সাময়িক এই সমস্যা হলেও জুলাইয়ের মধ্যে মেশিনগুলোতে সফটওয়্যার আপডেটের কাজ সম্পন্ন হবে। ফলে দ্রুতই গ্রাহকরা স্বাভাবিক সেবা পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ