নির্বাচনের আগে গণভোটে সংবিধান সংস্কার চায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

সংবিধান নিয়ে একমত হওয়া বিষয়ে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার চায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। একইসঙ্গে দলটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৫১টিতে একমত বলেও জানিয়েছেন দলটির প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম।

রোববার (২৩ মার্চ) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে বৈঠকটি চলে বেলা প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। বৈঠকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাত সদস্য প্রতিনিধিত্ব করেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ১৫১টি প্রস্তাবে একমত, ১০টি আংশিকভাবে একমত এবং ৫টিতে একমত নয় বলে জানিয়েছেন দলটির প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম। একইসঙ্গে দলটি অতিরিক্ত দুটি মতামত দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলে গণভোটের মাধ্যমে গ্রহণ করবে, তাহলে আমরা সেটাকে গ্রহণ করতে রাজি আছি।

তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে আমরা যে যে জায়গায় সবাই একমত হব, যতটুকু সংস্কার হওয়া প্রয়োজন, সেটা বাস্তবায়নের জন্য যদি গণভোটও করা হয়, তা মেনে নেব। আমরা প্রধানত চাই সংস্কারটা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে যেন হয়। এটা যেন নির্বাচিত সংসদের হাতে চলে যায়, এরকমটা না হয়ে আগেই যেন হয়। সেটা গণভোট বা সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচন হতে পারে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা নীতিমালা অন্য নামে রাখার কথা বলেছি। বহুত্ববাদের পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষতা যে অনুচ্ছেদ ছিল, ওখানে শিরোনামে ধর্মনিরপেক্ষতার বাদ দিয়ে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বলে বাকি আগে যা কিছু ছিল তা অক্ষুণ্ণ রাখতে বলেছি।

মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের জন্য জেলায় জেলায় নাগরিক আদালত করার প্রস্তাব রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন করেছে বলে জানান হাসনাত কাইয়ুম। একইসঙ্গে পুরোনো ১৯ জেলায় জেলা সরকার স্থাপনের প্রস্তাব করেন, যা অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা পাবে।

পাচার করা টাকা আদায় করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদলে বিশেষ অর্থনৈতিক ট্রাইব্যুনাল করার প্রস্তাব দলটি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

তাছাড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন নির্ধারিত ছয় মাসের মধ্যে সম্ভব বলে মনে করেন হাসনাত কাইয়ুম।

সংস্কারের মাধ্যমে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো চেষ্টা হচ্ছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, আমরা জাতীয় সংবিধান কাউন্সিলের পক্ষে। স্বাভাবিক অবস্থায় এনসিসিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিই বেশি থাকবে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যখন তাদের প্রতিনিধি থাকবে তখন মনে হবে অনির্বাচিত প্রতিনিধি বেশি। এটা তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কনসেপ্টের সঙ্গে বিরোধ করে না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ ছাড়াও কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।