পদত্যাগ করতে পারেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। সম্প্রতি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে নির্বাচনে তার দল ব্যাপক ব্যর্থতার মুখে পড়ায় তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে।
অবশ্য তার পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিলেও দেশটিতে অবিলম্বে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বুধবার (২৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা আগামী মাসে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্সকে জানিয়েছে একটি সূত্র। সদ্য অনুষ্ঠিত উচ্চকক্ষ নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন দল বড় ধরনের পরাজয়ের মুখে পড়ায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রমে পূর্ণ সমর্থন জাপানের প্রধানমন্ত্রীর
এরই মধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বহু প্রত্যাশিত বাণিজ্য চুক্তিও ঘোষণা করেছেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ওই সূত্র জানায়, ইশিবা নির্বাচন পরপরই পদত্যাগ করলে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারত, বিশেষ করে ১ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির সময়সীমা ঘনিয়ে আসায়। তাই তিনি কিছুটা সময় নিয়ে চুক্তি নিশ্চিত করার পর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। তার পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আগামী মাসে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার ইশিবা ও ট্রাম্প এক যৌথ চুক্তি ঘোষণা করেন, যেখানে জাপানি গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক হ্রাসের কথা বলা হয় এবং জাপানকে অন্যান্য পণ্যের ওপর কঠোর শুল্কের হাত থেকে রক্ষা করা হয়।
রয়টার্স বলছে, ক্ষমতায় আসার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যেই ইশিবার পদত্যাগের সম্ভাব্য এই খবর সামনে এলো। আর এটি ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) জন্য বড় ধাক্কা। এখন পার্টির নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে এবং একটি নতুন নেতা খুঁজে বের করতে হবে।
এদিকে, নতুন কিছু ডানপন্থি দল বিশেষ করে “জাপান ফার্স্ট” স্লোগানে আত্মপ্রকাশ করা চরম ডানপন্থি সানসেইতো পার্টি এলডিপির জনপ্রিয়তায় বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। রোববারের ভোটে ২৪৮ সদস্যের উচ্চকক্ষে তারা এক লাফে এক আসন থেকে বেড়ে ১৪টি আসন পেয়েছে। তারা অভিবাসন হ্রাস, কর কমানো ও মূল্যস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের আকর্ষণ করেছে।
বরে আগে গত বছর দলীয় নির্বাচনে কট্টর রক্ষণশীল প্রার্থী সানায়ে তাকাইচিকে পরাজিত করে ইশিবা প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু অক্টোবরের সাধারণ নির্বাচনে এলডিপি নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। ফলে ইশিবার উত্তরসূরিকে সংসদের দুই কক্ষেই সংখ্যালঘু অবস্থায় সরকার পরিচালনা করতে হবে।
সূত্র জানায়, নতুন প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবেন না। বরং, তিনি শুরুতে সংসদের অন্যান্য বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের সমর্থন নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন, যাতে প্রধানমন্ত্রীর পদে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়া যায়।
এরপরই তিনি দলের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে জনসমর্থন নেওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচন আয়োজনের পথে হাঁটবেন।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ