পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল

ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ। মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

ভারতীয় আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ বলেছেন, হয়তো ভারত শুরু করেছে, কিন্তু আমরা এটা শেষ করব।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বেসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বুধবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ প্রদেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে প্রদেশের সব স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ হাসপাতাল এবং উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোকে সতর্কতায় থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ছাড়াও, বেসামরিক প্রতিরক্ষা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিভাগের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে জরুরি তলব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সম্প্রতি এক সন্ত্রাসী হানায় ২৬ নিরীহ পর্যটক নিহত হন। এ ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করছে, অন্যদিকে পাকিস্তান হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তবে উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের একাধিক শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনারা। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। অন্যদিকে, ভারতীয় হামলাকে ‘বিনা প্ররোচনায় কাপুরুষোচিত’ বলে আখ্যা দিয়েছে পাকিস্তান। তারা পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করেছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত দেশের নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া উত্তর ভারতগামী ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বেশ কয়েক জায়গায় ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে পাকিস্তান বিমানবাহিনী প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী দাবি করে বলেন, ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংসের পর পাকিস্তান বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো নিরাপদে ‍ফিরে এসেছে।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) ধ্বংসপ্রাপ্ত জেটের মধ্যে তিনটি ফরাসি তৈরি রাফায়েল, একটি এসইউ৩০এমকেআই এবং একটি এমআইজি-২৯ ফুলক্রাম রয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন সামরিক মুখপাত্র।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) ধুন্দিয়াল সেক্টরে ভারতীয় সেনাদের ব্রিগেড সদরদপ্তর ধ্বংস করেছে এবং একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবস্থানের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তীব্র গুলি বিনিময় চলছে।

দুদেশের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে এয়ার ইমার্জেন্সি জারি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোর, মুলতান, ফয়সালাবাদ, স্কার্দু এবং পেশোয়ার বিমানবন্দরগুলোতে এ এয়ার ইমারজেন্সি জারি ঘোষণা করা হয়।

এক্সপ্রেস নিউজ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানে ভারতীয় বিমান হামলার পর পাকিস্তান উচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে বিমান চলাচল স্থগিত করে পাকিস্তান।

সরকারি সূত্র মতে, ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে সতর্কতার মধ্যে রাখা হয়েছে। এ বিমানবন্দরের আকাশসীমায় সব বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আকস্মিক এ সিদ্ধান্তে বিমান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নিরাপত্তার শঙ্কায় ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্ধারিত তিনটি ফ্লাইট বিকল্প পথে স্থানান্তর করা হয়েছে।