পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ক্ষতিগ্রস্ত তেলবাহী ২টি ট্যাংকার জাহাজ ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সীতাকুণ্ডের পুরোনো জাহাজভাঙা ইয়ার্ড জিরি সুবেদার শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ জাহাজ দুটি কিনে নিয়েছে। এই ট্যাংকার জাহাজ ২টি হলো এমটি বাংলার জ্যোতি এবং এমটি বাংলার সৌরভ।
ট্যাংকার দুটি বিক্রির দরপত্র নিলামে মোট ১৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছিল মাস্টার অ্যান্ড ব্রাদার্স। তারা দর দিয়েছিল ৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। তবে প্রতিষ্ঠানটি ট্যাংকার ২ টির মূল্য পরিশোধ না করায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জাহাজ ২ টি কেনার সুযোগ পায় জিরি সুবেদার শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রতিষ্ঠানটি ট্যাংকার দুটির দাম ছাড়াও কর বাবদ ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা পরিশোধ করে। এরপরই ৫ মার্চ ট্যাংকার দুটি প্রতিষ্ঠানটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) চট্টগ্রামে শিপিং করপোরেশনের কার্যালয়ে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। এ সময় শিপিং করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসসি জানায়, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের ডলফিন অয়েল জেটিতে নোঙর করে রাখা বিএসসির তেলবাহী ট্যাংকার জাহাজ ‘এমটি বাংলার জ্যোতি’তে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়েছিলেন। এরপর ৫ অক্টোবর মধ্যরাতে কোম্পানিটির আরেকটি ট্যাংকার ‘এমটি বাংলার সৌরভ’–এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাতেও এক নাবিক নিহত হন। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে এই দুটি ট্যাংকার জাহাজে অগ্নিকাণ্ডে চারজনের মৃত্যু হয়। এরপরই ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ দুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এমটি বাংলার জ্যোতি এবং এমটি বাংলার সৌরভ ট্যাংকার দুটি ১৯৮৮ সালে মোট ৬০ কোটি টাকায় ডেনমার্ক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। ট্যাংকার দুটির প্রতিটির তেল পরিবহন ক্ষমতা ১৪ হাজার ৫৪১ টন। গত ৩৮ বছরে ট্যাংকার দুটি ৪ কোটি ২৫ লাখ টন তেল পরিবহন করেছে। এতে বিএসসি প্রায় ৬০৭ কোটি টাকা নিট আয় করেছে।
বিক্রির পর ট্যাংকার ২ টি সীতাকুণ্ডের পুরোনো জাহাজ ভাঙা ইয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে। সেখানে এই ২টি ট্যাংকার জাহাজ কেটে বিক্রি করবে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান জিরি সুবেদার।