পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে: বিটিএমএ

দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে হলে সবার আগে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল জানিয়েছেন, এ খাতে যদি নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেয়া হয় তাহলে এই খাত বেঁচে যাবে। যে খাতগুলোতে প্রণোদনা দেয়া হয় তার উপকার সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-মালিক সবাই পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে যেসব খাত প্রণোদনা পাওয়ার দাবিদার তাদেরই প্রণোদনা দেয়া উচিত। এ সময় তিনি পোশাক খাতে অস্থিরতার বিসয়ে বলেন, আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুরসহ দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোর পোশাক কারখানাতে সাম্প্রতিক অস্থিরতার পেছনে বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে।
বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) নেতরা। দুপুরে বিটিএমএর বোর্ড সভার আগে দেশের টেক্সটাইল শিল্প খাতের পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তারা। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম, শামীম ইসলাম, সালেউদ জামান খান, পরিচালক, মোশারফ হোসেন, আজাহার খান, এম সোলায়মান, বিএম শোয়েব, মো. মনির হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মতিউর রহমান প্রমুখ।
সংস্থার সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অনেক কারখানা ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। অর্ডার চলে যাচ্ছে পাশের দেশগুলোতে। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। সরকারকে এই খাতে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের টেক্সটাইল মিলের মালিকরা শত অসুবিধা সত্ত্বেও সময়মতোই সব বেতন ভাতা পরিশোধ করছেন। কিন্তু আমরা এখন ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়ে গেছি। কারখানাগুলোর সামনে পঞ্চাশ-একশজনের বহিরাগত দল এসে উত্তেজনা তৈরি করে। এদের দমনে প্রশাসনকে আন্তরিক হতে হবে। অস্থিরতা প্রশমনে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, আমাদের দেশের কর্মীরা খুবই শান্তিপ্রিয়। প্রশাসন গত সরকারকে টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে যে পরিমাণ সক্রিয় ও আন্তরিক ছিল, সেই একই আন্তরিকতা এখন তাদের দেশ গড়ার ক্ষেত্রে দেখাতে হবে। তাদের ঘরে বসে থাকলে হবে না।
এ সময় পোশাক খাতের অস্থিরতা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিটিএমএ নেতারা বলেন, দেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল খাতে অস্থিরতা চলছে। এর পেছনে বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমাদের কাছে এর প্রমাণও রয়েছে। তারা আরো বলেন, স্থানীয় ঝুট ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপ কারখানাগুলোর সামনে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় ইন্ধন দিচ্ছেন। এর আগে ২০০৬ সালেও দেশের কারখানাগুলোয় অস্থিরতা তৈরি করা হয় বিদেশি ষড়যন্ত্রে। এরই পুনরাবৃত্তি এখনো ঘটছে।
বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের এজেন্টরা কারখানাগুলোতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও আগুন লাগানোর পেছনে জড়িত উল্লেখ করে বিটিএমএ নেতারা বলেন, এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কোন কোন আইডি থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে শিল্পাঞ্চলগুলোতে অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতে ভাঙচুর শুরু করা হয়। একই ধরনের লাঠি ও হ্যামার হাতে একটি গ্রুপ কারখানাগুলোতে ভাঙচুরের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের কাউকেই স্থানীয়রা এবং কারখানার শ্রমিকরা চেনেন না। এরাই হলো বিদেশি এজেন্টদের লোক। যাদের কেউ চেনে না। কারখানায় অসন্তোষ দেখা দিলেও শ্রমিকরা কখনোই কারখানার মেশিন ভাঙচুর করে না। কিন্তু এ অচেনা দাঙ্গা-হাঙ্গামাকারীদের উদ্দেশ্যই থাকে কারখানার মেশিন ভাঙচুর।

লিখিত বক্তব্যে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, বিটিএমএ প্রাইমারী  টেক্সটাইল  সেক্টরের  সর্ববৃহৎ  সংগঠন, এর সদস্য সংখ্যা  ১৮০০  তন্মধ্যে স্পিনিং, উইভিং এবং ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং  মিল অন্তর্ভূক্ত  রয়েছে ।‍ এ খাতে  বিনিয়োগের  পরিমাণ  প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বেসরকারী  খাতে একক বিনিয়োগ  হিসেবে সর্বাধিক।  দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০-৮৬% অর্জিত  হচ্ছে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাত হতে যার ৭০% এর যোগানদাতা  টেক্সটাইল  খাত এবং  এর মাধ্যমে  বৈদেশিক মুদ্রার রিটেশন  প্রায় ৩০%  এর মতো । তাই বিটিএমএ’র সদস্য মিলগুলি বর্তমানে আমদানি পরিপূরক শিল্প হিসেবে বিবেচিত ।

কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি আমরা  সফলভাবে  উত্তরণে  সক্ষম হলেও  রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের  প্রেক্ষিতে সমগ্র  বিশ্বে সৃষ্ট মন্দার কারণে  অন্যান্য দেশের  পাশাপাশি আমাদের শিল্প, অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । শিল্প তথা টেক্সটাইল খাতে বহুবিধ সমস্যার মধ্যে গ্যাসের  মূল্য ১৬ টাকা থেকে ৩২ টাকায় বৃদ্ধিকরণ, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, ডলারের সংকট, ব্যাংক সুদের হার ৯% থেকে ১৫/১৬%  বৃদ্ধি, এলডিসি  গ্র্যাজুয়েশনের  শর্তাবলী পূরণের  অজুহাতে রপ্তানির বিপরীতে নগদ  প্রণোদনা অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেয়া এবং টাকার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য । এতে দেশের রপ্তানিমুখী অধিকাংশ মিল তাদের  উৎপাদন  সক্ষমতার ৫০-৬০% ব্যবহার না করার ফলে  ধীরে ধীরে  তাদের  ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল  সংকুচিত হয়ে পড়েছে ।

এখানে বিশেষভাবে  উল্লেখ্য যে, শিল্প  খাতের সক্ষমতা  যথাযথভাবে  বিবেচনায়  না নিয়ে ইপিবি  এবং বিবিএস  কর্তৃক প্রদত্ত  বিভ্রান্তির তথ্য ও উপাত্তের  ভিত্তিতে  তৎকালীন সরকার কর্তৃক  গৃহীত  কতিপয়  সিদ্ধান্ত  টেক্সটাইল ও  অ্যাপারেল  খাতকে  অধিকতর  চ্যালেঞ্জের  সম্মুখীন করে তুলেছে ।  নভেম্বর ২০২৬ এ বাংলাদেশের  এলডিসি  গ্র্যাজুয়েশন  অর্থাৎ উন্নয়নশীল  দেশের তালিকায়  অন্তর্ভূক্ত  হলে রপ্তানি থেকে জিএসপি সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে । বর্তমানে পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে  অধিকাংশ মিলই  তাদের ইউটিলিটি  বিল, শ্রমিক- কর্মচারীর বেতন, ব্যাংকের নিয়মিত ঋণের  কিস্তিসহ কাঁচামাল  আমদানির বিল সময়মতো পরিশোধ করতে পারছে না । প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে সিংহভাগ  টেক্সটাইল মিল স্থবির  বা বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে। 

প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরের বিদ্যমান সমস্যা/চ্যালেঞ্জসমূহ উত্তোরনে করণীয় সমূহ নিম্নে ছক আকারে উপস্থাপন করা হলোঃ   

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাঃ

ক্রমসমস্যা/চ্যালেঞ্জসমস্যা সমাধানে প্রস্তাব/সরকারের করণীয়
.এইচ.এস কোডের ভুল সহ অন্যান্য অপরাধ সমূহের জন্য কাস্টমস আইন ২০২৩ এর শাস্তি প্রদান প্রসঙ্গে ধারা ১৭১-এ বর্ণিত টেবিল-এর ক্রমিক নং ৯ এ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফাঁকিকৃত শুল্ক-করের অন্যূন দ্বিগুন কিন্তু অনধিক চারগুন পরিমাণ অর্থ জরিমানা আরোপনীয় হইবে এবং সংশ্লিষ্ট পণ্য বাজেয়াপ্তযোগ্য হইবে । ঊল্লেখিত ৪০০% পর্যন্ত জরিমানা নির্ধারণ করা অযৌক্তিক ।কাস্টমস আইন ২০২৩ এর ধারা ১৭১-এ বর্ণিত টেবিল-এর ক্রমিক নং ৯-তে বর্ণিত শাস্তি ও জরিমানা বাতিল করে শুধুমাত্র প্রযোজ্য করাদির ১০% শাস্তি হিসেবে আরোপ করা যেতে পারে ।    
.এস.আর.ও ১৬১-আইন/আয়কর-৩৬/২০২৪, তারিখ: ২৯ মে ২০২৪ এ জারীকৃত উৎসে কর বিধিমালা ২০২৪ এর বিধি ৩ এর অর্ন্তভুক্ত সারনীর ৪ নং ক্রমিকে  তুলা ও সুতার ক্ষেত্রে উৎসে কর ১% করা হয়েছে এবং শিল্পোৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে ৩% করা হয়েছে যা বাস্তবায়ন করা শিল্প মালিকদের পক্ষে সম্ভব নয় ।এস.আর.ও ১৬১-আইন/আয়কর-৩৬/২০২৪ এর বিধি ৩ এর অর্ন্তভুক্ত সারনীর ৪ নং ক্রমিকে তুলা এবং সুতা সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার ০.৫% ধার্যকরণ। এস.আর.ও ১৬১-আইন/আয়কর-৩৬/২০২৪ এর বিধি ৩ এর অর্ন্তভুক্ত সারনীর ১২ নং ক্রমিকে এ শিল্পোৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল সরবারহের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৩% এর পরিবর্তে ০.৭৫% উৎসে কর ধার্যকরণ । 
.ট্যারিফ ভ্যালু সম্পর্কিত এস.আর.ও নং ২০২-আইন/২০২৪/৫৪/কাস্টমস; তারিখঃ ২৯মে ২০২৪ –এ ফেব্রিকের ট্যারিফ ভ্যালু যথাক্রমে ২.২৫, ৩.০০ মার্কিন ডলার থেকে সর্বোচ্চ প্রতি কেজি ফেব্রিকের মূল্য 4.75 মার্কিন ডলার ধার্য্য রয়েছে। বর্ণিত ট্যারিফ ভ্যালূ বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে পূনরায় নির্ধারন করা প্রয়োজন| যেখানে স্থানীয়ভাবে তৈরী অথবা আমদানি সুতার মূল্য প্রতি কেজি ৩.০০ মার্কিন ডলারেরও বেশী এবং পরবর্তীতে ফেব্রিক তৈরীতে উক্ত সুতা প্রসেসিংয়ে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উপাদানসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হলে তৈরী ফেব্রিকের ন্যূনতম উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে ৫.৪০ মা:ড: (সুতার মূল্য ৩.০০ মা:ড: এবং প্রসেসিং ব্যয় ২.৪০ মা:ড)। ফলে তৈরি ফেব্রিকের উৎপাদন ব্যয় নূন্যতম ৫.৪০ ডলারের কম  হয় না । উন্নত  ফেব্রিকের  ক্ষেত্রে তা ৮-১০  মার্কিন ডলার হয়ে যাবে ।উক্ত কাঁচামালের  ইম্পোর্ট  ডকুমেন্ট  ব্যাংকে দাখিল করার ৫ (পাঁচ) কর্ম দিবসের মধ্যে UCP-600 (Latest Version) এর নীতিমালা অনুযায়ী যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলি  রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) এর পেমেন্ট প্রদান করে তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ।
.মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ এর ৩১ ধারায় আমদানিকালে ৩% এবং ৫% হারে আগাম কর (Advance Tax) প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে যা আমাদের রপ্তানি বানিজ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরী করছে ।  উল্লিখিত ৩১ ধারা অনুযায়ী প্রদত্ত আগাম কর আমদানিকারককে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদ বা তৎপরবর্তী চারটি মেয়াদের মধ্যে ফেরত প্রদান করার বিধান থাকলেও সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটে ফেরত প্রদানের আবেদন দাখিল করলেও তা ২ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হলেও ফেরত পাওয়া যায় না । এর কারন হচ্ছে  সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটে লোকবলের স্বল্পতা এবং স্বদিচ্ছার অভাব । যেহেতু উক্ত আগাম কর  ফেরত প্রদানের বিধান রয়েছে সেহেতু উক্ত আগাম কর গ্রহণ পদ্ধতি বাতিল করা প্রয়োজন । বাতিল করলে সরকার এবং ভ্যাট পরিশোধকারী উভয়ের জন্যই তা সুবিধাজনক হিসেবে বিবেচিত হবে  কারন তখন ঐ কাজে সরকার এবং ব্যবসায়ী উভয় পর্যায়ে লোকবল এবং অর্থ সাশ্রয় হবে । তাছাড়া যেহেতু আমদানি পর্যায়ে ১৫% ভ্যাট এবং নির্ধারিত হারে উৎসে কর প্রদান করতে হয় তাই ৩১ ধারায় আগাম করের বিধান বাতিল করা বাঞ্ছনীয় ।
.জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাগন সংশ্লিষ্ট আইন সমূহের আলোকে বিভিন্ন অপরাধ, ভুল এইচ.এস.কোড, মিস-ডিক্লারেশন সহ নানাবিধ কারণে আর্থিক শাস্তি আরোপ করে থাকেন । আরোপিত আর্থিক শাস্তির অর্থ থেকে তাদেরকে উল্লেখযোগ্য পরিমানে ইনসেন্টিভ প্রদান করা হয় । এতে একদিকে সরকার যেরকম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন তেমনি ব্যবসায়ীরা আইনের অপপ্রয়োগের শিকার হন । যেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাগন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সেহেতু তাদের এ ধরনের সুবিধা প্রদান অনৈতিক । এতে তাদের কেউ কেউ আইনের অপপ্রয়োগ করে অবাধে অর্থ উপার্জন করছে । তাই অনতিবিলম্বে এই বিধান বাতিল করা প্রয়োজন ।  
.জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাগন বিভিন্ন সময়ে বিশাল অংকের পেনাল্টি ধার্য করেন যার বিপরীতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিগন সংশ্লিষ্ট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করলে তাদেরকে ধার্যকৃত অর্থের ২০% প্রদান করে আবেদন দাখিল করতে হয় । পরবর্তীতে উচ্চতর আদালতে অর্থাৎ হাই কোর্টে  আপীল করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে আরো ৩০% অর্থ জমা দিতে হয় । ফলে আপীলের ক্ষেত্রে ৫০% অর্থ জমা করতে হয় যাতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন । জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাগন কর্তৃক ধার্যকৃত বিশাল অংকের পেনাল্টির বিপরীতে সংশ্লিষ্ট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপীল করার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ২% এবং উচ্চতর আদালত অর্থাৎ হাই কোর্টে  আবেদনের জন্য ১% অর্থ জমা গ্রহণ করে আপীল করার সুযোগ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। আমদানীকারককে যদি ধার্যকৃত বিশাল অংকের পেনাল্টির বিপরীতে ৫০% অর্থ জমা করতে হয় তাহলে তাঁর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল থাকবে না এবং মিল পরিচালনা করতে পারবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাঃ

ক্রমসমস্যা/চ্যালেঞ্জসমস্যা সমাধানে প্রস্তাব/সরকারের করণীয়
১.কোভিড-১৯, ইউক্রেন-রাশিয়া ও ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ, ২৫০% গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিকের বেতন ৭০% বৃদ্ধি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বন্যা সহ অন্যান্য সমস্যার কারণে রপ্তানিমুখী প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরের ইন্ডাস্ট্রিসমূহ ব্যাংকের গৃহীত ঋণের কিস্তি (সুদসহ) পরিশোধে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি এই মুহূর্তে অপারগ হওয়ায় তাদের কারো কারো Overdue হয়েছে । এই মুহূর্তে রপ্তানিমুখী প্রাইমারী টেক্সটাইল  সেক্টরের ইন্ডাষ্ট্রি সমূহের পক্ষে মেয়াদী ঋণের  কিস্তি পরিশোধ অসম্ভব ।   বর্তমান ওভারডিউ সহ মেয়াদী ঋণের কিস্তি (সুদবিহীন) ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত স্থগিতকরন এবং এই পিরিয়ডের সমুদয় টাকা নির্দিষ্ট ঋণের মেয়াদ শেষে হওয়ার পরবর্তী ৪ (চার) বছরের মধ্যে সমান কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ প্রদান ।    
২.বিটিএমএ’র সদস্য ভূ্ক্ত মিলগুলি  কর্তৃক  ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি’র মাধ্যমে সরবরাহকৃত ইয়ার্ণ ও ফেব্রিকের বিপরীতে  তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান  সমূহের  সংশ্লিষ্ট  এলসি প্রদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ Accepted/Matured বিল যথাসময়ে পরিশোধ না করার ফলে মিলগুলিতে তারল্য সংকট । কোন কোন মিলের Accepted/Matured বিলের বিপরীতে ২ বছর বা তারও অধিক সময় অতিবাহিত হলেও ব্যাংক বিল পরিশোধ করছে না । উক্ত Accepted/Matured বিলের অর্থ আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ কর্তৃক দ্রুত পরিশোধের  জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলিকে প্রয়োজনীয়  নির্দেশনা প্রদান । উল্লেখ্য  ইতোপূর্বে  বিষয়টি  কয়েকবার  বাংলাদেশ  ব্যাংকের নিকট তথ্য  উপাত্তসহ  উপস্থাপন করা হলেও  কোন  সমাধান পাওয়া যায়নি । অন্যদিকে সরবরাহকৃত পণ্যের বিলসমূহ Accepted/Matured হওয়ার পরে যাতে ব্যাংকগুলি যথা সম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে উক্ত বিল পরিশোধ করে তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্দেশনা প্রদান ।
৩.বিটিএমএ’র সদস্যভুক্ত  মিলুগলি মুলত রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) এর অর্থ দিয়ে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি করে থাকে ।  উক্ত কাঁচামালের ইম্পোর্ট  ডকুমেন্ট ব্যাংকে আসার ৫ (পাঁচ) কর্ম দিবসের মধ্যে UCP-600 (Latest Version) এর নীতিমালা অনুযায়ী সরবরাহকারীদের পেমেন্ট নিশ্চিত করতে হয় । অন্যথায় তাঁরা পরবর্তীতে পুনরায় পণ্য সরবরাহ করবে না যার ফলে দেশের টেক্সটাইল সেক্টরের রপ্তানি কার্যক্রমের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ।   উক্ত কাঁচামালের  ইম্পোর্ট  ডকুমেন্ট  ব্যাংকে দাখিল করার ৫ (পাঁচ) কর্ম দিবসের মধ্যে UCP-600 (Latest Version) এর নীতিমালা অনুযায়ী যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলি  রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) এর পেমেন্ট প্রদান করে তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ।
৪.ব্যাংক সুদের হার প্রায় ৯% থেকে ১৫% বৃদ্ধি পাওয়ায় উক্ত  ১৫% সুদ প্রদান করে দেশের কোন  টেক্সটাইল শিল্প প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টিকে থাকা যাবে না । বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ার মতো দেশের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকা যাবে না । রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহ যেহেতু Export Proceed হিসেবে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ডলার সংগ্রহ করে তাই এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য সুদের হার ৯% নির্ধারন করা প্রয়োজন । অন্যদিকে স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের জন্য ব্যাংকের সুদের হার অনতিবিলম্বে সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের  প্রয়োজনীয়  ব্যবস্থা নেয়া । 
৫.টাকার অবমূল্যায়নের কারণে মিলগুলি ওয়ার্কি ক্যাপিটালের প্রায় ৪০% ঘাটতি হয়েছে এবং তুলা ও অন্যান্য  কাঁচামাল আমদানিতে  এলসি খুলতে ব্যাংকের অনীহা প্রকাশ করা হচ্ছে ।১. আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মুল্য বৃদ্ধি ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে মিলগুলির ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের  সংকোচনে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলা ও আমদানি রপ্তানি  কার্যক্রম সচল  রাখার জন্য টাকার অবমূল্যায়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নন-ফান্ডেড (এল/সি) লিমিট বৃদ্ধি করা এবং নন-ফান্ডেড (এল/সি) লিমিট বৃদ্ধির ফলে Single Borrower Exposure Limit অতিক্রম করলেও তা Allow করা ।  অথবা, ২. যদি Single Borrower Exposure Limit বৃদ্ধি করা সম্ভব না হয় তাহলে বিদ্যমান নন-ফান্ডেড (এল/সি) লিমিটকে ৮৪ দিয়ে ভাগ করে প্রাপ্ত ফলের সমপরিমানকে এল/সি লিমিট হিসেবে ডলারে নির্ধারন করা । যেহেতু টেক্সটাইল মিলগুলি রপ্তানির বিপরীতে প্রসিড হিসেবে ডলার নিয়ে আসে সেহেতু এল/সি লিমিট ডলারে নির্ধারন অধিকতর যৌক্তিক ।
৬.কিছু কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্তৃক টেক্সটাইল সেক্টরের Basic Raw Materials  যেমনঃ Raw Cotton, Man-made Fiber, Chips, Dyes, Chemicals  ইত্যাদি আমদানির জন্য ১৫-২০% মার্জিনে UPASS/ Sight/Deferred L/C/EDF খোলার জন্য ১৫-২০% মার্জিন রাখার প্রতি জোর দিচ্ছে । উক্ত Basic Raw Materials সম্পুর্ণ আমদানি করতে না পারলে আমাদের রপ্তানিও স্বাভাবিকভাবেই  ব্যাহত হবে । যেহেতু অতীতে ০% মার্জিনে রপ্তানিমুখী টেক্সটাইল শিল্পের জন্য Raw Cotton, Man-made Fiber, Chips, Dyes, Chemicals ইত্যাদি আমদানির জন্য UPASS/ Sight/Deferred L/C/EDF খোলার সুযোগ ছিলো তাই বর্তমান সংকট  বিবেচনা  করে পুর্বের মতো ০% মার্জিনে  এল/সি খোলার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে নির্দেশনা জারী করা  অত্যাবশ্যক। উল্লেখ্য, এস আলম গ্রুপের মালিকাধীন ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আরোপিত বিধিনিষেধ সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য আরোপ না করে  শুধুমাত্র  এস আলম গ্রুপের মালিকাধীন  প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য প্রযোজ্য রাখা এবং  অন্যান্য নিয়মিত প্রতিষ্ঠানের জন্য ০% মার্জিনে  এলসি খোলার বিধান চলমান রাখা আবশ্যক। 
৭.রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ ফান্ডের পরিমাণ ৩০ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ২০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ এবং অধিকাংশ ব্যাংকের  এই ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়েও অনীহা ।রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ ফান্ডের ২০ মিলিয়ন ডলার হতে এল/সি ওপেনিং ব্যাংক ইডিএফ থেকে ডলারের জন্য রিকুইজিশন দেয়ার সাত দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলি যাতে ইডিএফ ফান্ডের ডলার ব্যয়/পেমেন্ট করে তা নিশ্চিত করা ।
৮.গত ৩০ জুন ২০২৪ তারিখ  বাংলাদেশ ব্যাংক  ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের রপ্তানির বিপরীতে  প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে এফ.ই সার্কুলার নং ১২ জারী করেছে ।  সার্কুলারটিতে টেক্সটাইল  এবং অ্যাপারেল  সেক্টরের জন্য প্রযোজ্য  ১,২,৩,৪,৫ এবং সিরিয়ালের আইটেম সমূহে (যার সবগুলোই বিটিএমএ সদস্য  কর্তৃক ‍উৎপাদিত পণ্য) রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা/নগদ সহায়তার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো হয়েছে, ফলে এ শিল্প মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে ।  উল্লেখ্য,  ইতোপূর্বে  গার্মেন্টের জন্য ২৫% নগদ সহায়তা  প্রদান করে হয়েছিলো । তবে  তা প্রাইমারী  টেক্সটাইল সেক্টরের জন্য ছিলো না ।  স্পিনিং, উইভিং এবং ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিংয়ের জন্য পৃথকভাবে প্রণোদনা না দেয়ায়  মিলগুলি  মারাত্মকভাবে  ক্ষতিগ্রস্থ।অনতিবিলম্বে ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের  জারীকৃত এফ.ই সার্কুলার নং ১২ প্রত্যাহার করে প্রাইমারী  টেক্সটাইল  সেক্টরের জন্য অর্থাৎ স্পিনিংয়ে ৩%, উইভিংয়ে ৪% এবং ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিংয়ে ৩% বর্তমান সংকট উত্তরণ তথা পরিস্থিতি সন্তোষজনক ও শিল্প অনুকুল হওয়া অব্দি নগদ সহায়তা/ প্রণোদনা প্রদান করা।
৯.বর্তমানের কঠিন পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের স্যালারী, ওয়েজ, গ্যাস-বিদ্যুতের বিল এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিটানো মিলগুলির পক্ষে সম্ভব নয় ।    উল্লিখিত কঠিন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের স্যালারী, ওয়েজ, গ্যাস-বিদ্যুতের বিল পরিশোধ এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিটানোর নিমিত্তে মিলগুলিকে ৩ (তিন) হাজার কোটি টাকা সফট লোন (Soft Loan) অনতিবিলম্বে প্রদান করা অত্যাবশ্যক । এই ঋণ আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে সমান কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ  প্রদান ।  

জ্বালানী খাত সম্পর্কিত সমস্যাঃ

ক্রমসমস্যা/চ্যালেঞ্জসমস্যা সমাধানে প্রস্তাব/সরকারের করণীয়
১.শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের  নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের  সংকট এবং প্রায়  ২৫০% মূল্য বৃদ্ধি ।  বিশেষ করে শিল্পঘন  এলাকা নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নসিংদী, সাভার, আশুলিয়া, মাওনাসহ দেশের অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত স্পিনিং, উইভিং ও ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিলে গ্যাস সরবরাহ  মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।  ফলে মিলগুলি  তাদের উৎপাদন  ক্ষমতার  অর্ধেক  ব্যবহার করতে পারছে না। টেক্সটাইল  খাতের অবদান, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রা আহরন এবং  সাশ্রয়ের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল ও টেকসই করার জন্য টেক্সটাইলকে অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিতসহ রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য পার কিউবিক মিটার গ্যাসের মূল্য পূর্বের ন্যায় ১৬ টাকা নির্ধারন এবং স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিক  বাজারে গ্যাসের  মূল্যের  সাথে সংগতি রেখে সময়ে সময়ে  গ্যাসের  মূল্য সমন্বয়করণ এবং অনতিবিলম্বে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে জরুরী ভিত্তিতে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ।   

এলডিসি গ্রাজুয়েশন সম্পর্কিত সমস্যাঃ

ক্রমসমস্যা/চ্যালেঞ্জসমস্যা সমাধানে প্রস্তাব/সরকারের করণীয়
১.বিভিন্ন বৈশ্বিক সংকট ও নানাবিধ সমস্যায় দেশের টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল সেক্টর বর্তমানে মারাত্মক সংকটের মধ্যে রয়েছে । এমতাবস্থায় ইপিবি এবং বিবিএস কর্তৃক প্রদত্ত বিভ্রান্তিকর তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে ২০২৬ এর নভেম্বরে এলডিসি গ্রাজুয়েশন করার সিদ্ধান্ত দেশের টেক্সটাইল সেক্টরের অগ্রযাত্রা ব্যাপকহারে  বাধাগ্রস্ত হবে এবং এ সেক্টরের সংকট আরো তীব্র হবে ।বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনের প্রক্রিয়া স্থগিতকরণ করা ।