ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইইবি) প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম খান ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু তার মৃত্যু নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইইবি কর্তৃপক্ষ। তবে মিথ্যা তথ্য অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি এজহার দায়ের করেছে আইইবি।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো।
সংবাদ সম্মেলনে আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান বলেন, সোমবার (১২ মে ২০২৫) সকালে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু সনদে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, মৃত ব্যক্তির ম্যাসিভ হেমারেজ, নিউমোনিয়া, কিডনি ইনজুরি, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা ছিল। অর্থাৎ প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম খানের মৃত্যুতে কোনো বাহ্যিক ইনজুরি (এক্সটার্নাল ইনজুরি) নেই। এ ঘটনায় আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম রিজুসহ আইইবির পক্ষে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
তবে আইইবি’র প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম খানের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু নিয়ে ‘কাইউম-হাবলু-মাহফুজ-ফজলু গং’ ন্যাক্কারজনক এবং মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আইইবি কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, আইইবির প্রেসিডেন্ট মহোদয়ের আমন্ত্রণে আইইবি’র এক্সট্রা অর্ডিনারি জেনারেল মিটিং (ইওজিএম) গত শনিবার (১০ মে) বিকেলে ঢাকার আইইবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ইওজিএমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আগত প্রকৌশলীদের উপর ‘কাইউম-হাবলু-মাহফুজ-ফজলু গং’দের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে বহিরাগত একশ থেকে দেড়শজন সন্ত্রাসী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ন্যাক্কারজনক হামলা করে। সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে প্রকৌশলীদের ওপর ইট-পাটকেল, গরম পানিসহ কেটলি, মরিচের গুড়া ইত্যাদি ব্যবহার করে হামলা চালায়। এই ন্যাক্কারজনক হামলায় প্রকৌশলী ও পুলিশসহ ১০/১২ জন আহত হন। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আইইবি সদর দপ্তর প্রাঙ্গণে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেশের প্রকৌশলীদেরকে মর্মাহত করেছে।
আইইবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইতোমধ্যে আমরা জানতে পারি যে, আমাদের সহকর্মী শফিকুল ইসলাম খান স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু তার মৃত্যুকে নিয়ে অপরাজনীতিকারী, মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী এবং আইইবির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী ‘কাইউম-হাবলু-মাহফুজ-ফজলু গং’ কে প্রকৌশলী সমাজ বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আইইবি কর্তৃপক্ষ যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম রিজু বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচারকারীরা প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম খানের মৃত্যুর জন্য আইইবি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি ষড়যন্ত্রকারী কর্তৃপক্ষ। অথচ মরহুমের স্ত্রী বলছে যে, তার স্বামী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম খান স্বাভাবিক কারণেই মারা গেছেন। তার স্বামী বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এবং হামলার ঘটনায় আমরা ইতোমধ্যে শাহবাগ থানায় এজহার দায়ের করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইইবির কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী শেখ আল-আমিন, প্রকৌশলী খান মঞ্জুর মোর্শেদ, প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন ভুঁইয়া, প্রকৌশলী এটিএম তানভীরুল হাসান তমাল, আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. হেলাল উদ্দিন তালুকদার, সেক্রেটারি প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, সহকারী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আহসানুল রাসেল, প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ ওসমানী, প্রকৌশলী নূর আমিন লালন, প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।