#এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে জানালেন প্রশাসক
ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় ‘ট্রেড লাইসেন্স’ দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি আরো বলেন, ব্যবসা বৈধকরণ সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে উদ্যোক্তারা এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে সব ধরনের সহায়তা দেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। তিনি জানান, সরকার আগারগাঁও এলাকাকে একটি ‘মডেল এলাকা’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যেখানে সকল ক্ষুদ্র ও অনানুষ্ঠানিক ব্যবসায়ীকে বৈধ করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:এমএসএমই উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে একসাথে কাজ করবে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং UNIDO: চুক্তি স্বাক্ষর
বৃহস্পতিবার(১০ জুলাই ২০২৫) এসএমই ফাউন্ডেশন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর উদ্যোগে ‘Formalize Your Business’ প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। তিন দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা অনানুষ্ঠানিক খাতে পরিচালিত খাবারের স্টল, কসমেটিকস ও বিউটি পণ্য, পোশাক, ই-কমার্স ও প্ল্যাটফর্ম-ভিত্তিক উদ্যোক্তাদের ব্যবসা বৈধকরণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করা এবং তাদেরকে আইনি, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সক্ষম করে তোলা। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাগণ দীর্ঘদিন ধরে ট্রেড লাইসেন্স বা নিবন্ধন ছাড়া নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তারা প্রশিক্ষণে ব্যবসা বৈধকরণ ও ট্রেড লাইসেন্স প্রক্রিয়া, আয়কর ও ভ্যাট বিষয়ক নিয়মাবলী এবং খাদ্য ও পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে ধারণা লাভ করেন। এসএমই ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে, এ ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনানুষ্ঠানিক খাতকে মূলধারায় যুক্ত করে দেশের অর্থনীতিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই করে তুলবে। উল্লেখ্য, ইতঃপূর্বে ২১ এপ্রিল ২০২৫ ঢাকার গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের দপ্তরে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সাথে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সভায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ঢাকা হাট’ স্থাপন এবং ঢাকার ১ লাখ হকারকে পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণে একসাথে কাজ করা, যৌথ উদ্যোগে ঢাকার আগারগাঁওসহ বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী হলিডে মার্কেট চালু, নতুন উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার পরিচালনার বিষয়ের বিষয়ে একমত হয় এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান ৩২% শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষার প্রাথমিক প্রতিবেদন বলছে, দেশে প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫% এসএমই খাতে। এই খাতে তিন কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে। অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। শ্রমনিবিড় ও স্বল্প পুঁজিনির্ভর খাত হওয়ায় জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এমএসএমই খাতের অবদান অনেক। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও সিএমএসএমই খাতের বিকাশ ও উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এবং এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, যাদের ৬০% ই নারী-উদ্যোক্তা।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।