সুখী ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশের নতুন যাত্রায় বিদেশি বন্ধুদের সহযোগিতা কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।
নিউইয়র্ক সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে, সংস্কার করা। আমাদের শুরুটা ভালো করতে হবে। এটি বাস্তবায়নে আপনাদের সবার সমর্থন প্রয়োজন।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদস্যপদ লাভের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আরও ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহ, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আলোকচিত্রী, লেখক, কিউরেটর ও অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলম শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনাগুলো নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যারা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল আমরা তাদের হতাশ করতে চাই না।’
সংস্কারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের পর নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে ছাত্ররা তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি বছর। এটা বাংলাদেশের তরুণরাই নিয়ে এসেছে।’
এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়া এবং সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানায় জাতিসংঘ।
ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে আমার শুভেচ্ছা জানাই সাধারণ পরিষদে যোগদানের জন্য। এ বছর বাংলাদেশ জাতিসংঘে তার ৫০ বছরের সম্পর্ক উদযাপন করছে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।
এ ছাড়া প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গেও ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ২০২৪-এর বৈঠকে মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছিলেন ড. ইউনূস।
ইউএনজিএর ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন অধ্যাপক ইউনূস।
গতকাল মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্ক শুরু হয়। চলবে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত। এই আয়োজনের পর্দা নামবে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর)। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘কাউকে পেছনে ফেলে নয় : বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শান্তি, টেকসই উন্নয়ন ও মানবিক মর্যাদার অগ্রগতিতে একসঙ্গে কাজ করা’।