#ডিএসই’র চেয়ারম্যানের সাথে ডিবিএর বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বিও হিসাবের মেইনটেন্যান্স ফি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া ব্রোকারেজ হাউজ এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সিসি একাউন্টের ইন্টারেস্ট ব্রোকারদের ব্যবহার করা এবং চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমোডিটি মাকেট চালুর প্রবিধানমালা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের রাইট শেয়ার অনুমোদিত হয়েছে। উল্লেখিত সুবিদাধি বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজারে অনুকূল সাড়া পড়বে এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ও সার্বজনীন বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বৈঠকে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
আরও পড়ুনঃবিএসইসির গড়পড়তা চিঠিতে শেয়ারবাজারে নতুন আতঙ্ক
গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম ডিবিএ’র সদস্যদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানয়ে এসব কথা বলেন। ডিএসই’র বোর্ডরুমে আয়োজিত সভায় পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহযোগীতার জন্য ডিএসই’র চেয়ারম্যান বিশেষ ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র পরিচালক মোঃ শাকিল রিজভী, মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি রোজারিও, ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম সহ ডিবিএ’র পরিচালক ও ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত গত মঙ্গলবার বিএসইসি’র ৯৫৭তম কমিশন সভায় দেশের পুঁজিবাজারে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের মেইনটেইন্যান্স ফি ৪৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া সমন্বিত গ্রাহক হিসাব (সিসিএ) হতে অর্জিত সুদ আয়ের ২৫ শতাংশ স্টক এক্সচেঞ্জের ইনভেস্টরস প্রটেকশন ফান্ডে জমা দিয়ে বাকি অর্থ ব্রোকাররা ব্যবহার করতে পারা, চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমোডিটি মাকেট চালু এবং বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড-এর রাইট শেয়ার অনুমোদন বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মমিনুল ইসলাম আরো বলেন, আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চোধুরীর মাধ্যমে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা রেখেছি যে, আমাদের আগামী বাজেটে টার্নওভারের উপর অগ্রিম যে আয়কর রয়েছে তা ১ লক্ষ টাকায় ৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫ টাকা করার জন্য। তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের ব্যবধান ন্যূনতম ১০% করা। ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীর জন্য সম্পূর্ণরূপে বাদ দেয়া। ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারী থেকে কর্তনকৃত ডিভিডেন্ড ট্যাক্স চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচনা করা। ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ট্যাক্সকে কর মুক্ত রাখা।
পরে পুঁজিবাজারের এ ক্রান্তিকালে স্বল্পমেয়াদে কি কি পদক্ষেপ নিলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে আলোচনার আহবান জানান মমিনুল ইসলাম।
আলোচনায় ডিবিএ’র সদস্যবৃন্দ বর্তমান বাজার পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ এবং ভবিষ্যতে বাজারকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে ডিএসইর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট টিম গঠন, মার্কেট কমিউনিকেশন স্ট্রাটেজি প্রনয়ণ, তারল্য সংকট, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স, পলিসি সাপোর্ট, নগদ উত্তোলনের সুবিধা দেয়া, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, আইপিও পদ্ধতির সংস্কার (ডিজিটালাইজড), মন্দ আইপিও না আনা, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম পর্যালোচনা, বিও অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে বাড়ানো, নতুন বিনিয়োগকারী আনা, ডিএসই মনিটরিং কার্যক্রমে প্রযুক্তির অর্ন্তভূক্তি, টি+১ এবং ডে ট্রেডিং চালু, সরকারি কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনা, প্রান্তিক পর্যায়ে শেয়ারব্যবসার সম্প্রসারণ, প্রাইমারি মার্কেটকে গতিশীল করা, আইপিও প্রসেসকে সহজিকরণের মাধ্যমে ভালো আইপিও আনার জন্য ডিএসই মার্কেটিং কার্যক্রম গতিশীল করা, জাতীয় বাজেটে বিশেষ প্রনোদনা সংযোজন করা, নেগেটিভ ইক্যুইটির সমাধান ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন।
ডিএসই’র চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের একটি বিশদ কমিউনিকেশন স্ট্রাটেজি তৈরি ও সে অনুযায়ী মার্কেট স্টেক হোল্ডারদের সাথে নিয়মিত মতবিনিময় করতে হবে। সরকার, বিএসইসি, ডিএসই, ডিবিএ সবাই মিলে কিভাবে মার্কেটকে পজেটিভলি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারি সে বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। ঈদ পরবর্তী সময়ে বাজার উন্নয়নে আমাদের আরো কিছু পরিকল্পনা রয়েছে, এর মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ, কিছু সম্ভাবনাময় কোম্পানি এবং বাংকের প্রধান নির্বাহীদের সাথে বৈঠক, তা আমরা পর্যায়ক্রমে করে যাবো। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভার্নমেন্ট ট্রেজারি বিল বন্ডের প্রাইমারি অকশনটা যেন স্টক মার্কেটের মাধ্যমে করা হয়, তার জন্য আমরা প্রস্তাব রেখেছি।
পরিশেষে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়ন নিয়ে খুবই আন্তরিক। তাই বিনিয়োগকারীদের হতাশ না হয়ে উৎসাহের সাথে ভালো শেয়ারে নতুন বিনিয়োগ করার আহবান জানান। তিনি উপস্থিত অতিথীদের মার্কেটের আস্থা বাড়াতে একযোগে কাজ করার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।