#১৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ফোরামের প্রার্থীরা। তারা বলেছেন, নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই শিল্পের উন্নয়নে নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিয়ে কাজ করবেন। আসন্ন নির্বাচনে ফোরাম জয়ী হলে বিজিএমইএ হবে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম।
মঙ্গলবার রাতে বিজিএমইএ নির্বাচন (২০২৫-২৭) ফোরাম পর্ষদের প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা উৎসবমুখর, স্বচ্ছ, সুন্দর ও জালভোটবিহীন একটি নির্বাচন প্রত্যাশা করেন বলে জানান।
বিজিএমইএ নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রামের বিজিমএইএ ভবনের মাহবুব আলী হলরুমে এই পরিচিতি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় পোশাক শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে ফোরামের ১৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু। এর প্রথম দফা হিসেবে রয়েছে- পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা।
সেবা সততা সাহস সমৃদ্ধি- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ফোরাম-বিজিএমইএ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। চট্টগ্রামের প্যানেল লিডার সেলিম রহমানের সঞ্চালনায় পরিচিতি সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম, ফোরামের মহাসচিব ড. রশীদ আহমেদ হোসাইনী, ব্যারিস্টার ভিদিয়া অমৃতা খান প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফোরামের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
পরিচিতি পর্বে জায়ান্ট স্ক্রিনে পরিচালক প্রার্থী সুমাইয়া ইসলাম রোজালিনসহ ৩৫ জন প্রার্থীর নিজ নিজ প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের চিত্র ভোটারদের সামনে তুলে ধরা হয়।
কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, ফোরামকে এগিয়ে যেতে হলে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। কেবল নির্বাচনের জন্য এই ঐক্য হলে হবে না; নির্বাচনের পরেও যাতে এই ঐক্য থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একে অপরকে সম্মান করতে হবে। নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে। তবেই পোশাক শিল্পের উন্নয়নে সামগ্রিক সাফল্য আসবে।
প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, একটি টিম তখনই সাফল্য লাভ করে যখন সবাই মিলে টিম হিসেবে কাজ করে। অতীতে সবাই কাজ করলেও তার কৃতিত্ব চলে যেত সভাপতির ঝুলিতে। উপর থেকে অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়া হতো। তিনি সেরকম নেতা হতে চান না। সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করে বিজিএমইএ’র হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চান। ৩১ মে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে প্রতিপক্ষ শক্তি প্রদর্শনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দেওয়ার আহ্বান জানান। নির্বাচন কমিশনের সেই সক্ষমতা রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃবিজিএমইএ নির্বাচন:পোশাক খাতে আলাদা মন্ত্রণালয়সহ ১৪ দফা ইশতেহার
মাহমুদ হাসান খান বাবু ফোরামের ১৪ দফার ইশতেহার তুলে ধরেন। ইশতেহারে উল্লেখযোগ্য দফার মধ্যে রয়েছে পোশাক শিল্পের জন্য স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, বিইউএফটিকে বিজিএমইএ’র অন্তর্ভুক্তকরণ, এসএমই ও নন বন্ডেড শিল্পকে সহায়তা করা, কাস্টমস ও ভ্যাটে নিত্যদিনের সমস্যা দূর করা, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, শ্রমিক ও শিল্পের নিরাপত্তা ইত্যাদি।
চট্টগ্রামের প্যানেল লিডার সেলিম রহমান বলেন, অতীতে দেখেছি বিজিএমইএ-তে যাদেরই পাঠাই তারাই যেন ম্যানেজড হয়ে যান। এ কারণে হাতাশা ছিল। কিন্তু ফোরামের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম দেখেছি। নীতি প্রণয়ন ও নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ফোরাম আওয়াজ তুলতে পারে সঠিক জায়গায়। এ কারণেই ফোরামকে আমি পছন্দ করি। ৩১ মে যে নির্বাচন হবে সেটাই হয়তো শেষ অপরচুনিটি বা সুযোগ পোশাক শিল্পের মালিকদের জন্য। আশা করছি, ভোটাররা যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নেবেন।
ফোরামের মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী বলেন, দেশের মানুষ ১৫-১৬ বছর নির্বাচন দেখেনি। ৫ আগস্টের পর নির্বাচনের স্বপ্ন দেখছে। গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসার আশা জেগেছে। বিজিএমইএ নির্বাচন হতে পারে এর প্রথম ধাপ।
বিজিএমইএ নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন বোর্ডের সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দি বলেন, একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কমিটেড তাদের বোর্ড। তিনি সবার জন্য শুভ কামনা করেন।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।