পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব পেলে খাতের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন, কাস্টমস ও ব্যাংক সমস্যার সমাধান এবং ট্যারিফ যুদ্ধ মোকাবেলায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণসহ টেকসই পোশাকখাত গড়ে তুলতে ১৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে বিজিএমইএ নির্বাচন কেন্দ্রিক জোট-ফোরাম।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে প্রার্থী পরিচিতি অনুষ্ঠানে এই ইশতেহার ঘোষণা করে ফোরাম এর প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু। নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল এর সভাপতিত্বে প্যানেল পরিচিতি সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা এবং আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ। সভায় সাধারণ সদস্যদের সামনে ফোরাম প্রার্থীদের পরিচিতি করিয়ে দেন ফোরাম প্যানেল লিডার।
পরিচিতি সভায় ফোরামের প্যানেল লিডার জানান,বিজিএমইএর নেতৃত্ব পেলে, এসএমই ও নন-বন্ডেড শিল্পকে সহায়তা, রুগ্ন শিল্পের জন্য বিশদ এক্সিট পলিসি প্রণয়ন, ট্যারিফ যুদ্ধ মোকাবিলায় দৃঢ়ভাবে সরকারের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এসময় ফোরাম সভাপতি আব্দুস সালাম, মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসেনী, প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফয়সাল সামাদসহ ফোরাম প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, পোশাক শিল্প শুধু ব্যবসা নয়, এটি আমাদের শ্রম, আত্মত্যাগ আর স্বপ্নের প্রতিফলন। তবে আজকের বাস্তবতায়, বিজিএমইএর ভূমিকা কেবল সার্টিফিকেট বা কাগজপত্র সরবরাহে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। প্রয়োজন এমন নেতৃত্ব, যারা সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধান আনবে। বাংলাদেশকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে বিজিএমইএকে দায়িত্ব নিতে হবে।
ফোরামের ইশতেহারে বলা হয়, আজকের এসএমই কারখানা আগামী দিনের বড় শিল্প। তাই নেতৃত্ব পেলে ছোট ও মাঝারি এবং নন-বন্ডেড কারখানার দিকে বাড়তি মনোযোগ দেবে এই প্যানেলটি। তারা কারখানা, মালিক ও শ্রমিক সবার স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। সকলের স্বার্থ রক্ষা করেই একটি এক্সিট পলিসি তৈরিতে সরকারের সঙ্গে কাজের কথাও এতে বলা হয়েছে।
প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির আলোকে জোটটি জানিয়েছে, মালিকদের বিপদে-আপদে পাশে থাকার জন্য একটি বিশেষ তহবিল গড়ে তোলা হবে। ট্যারিফ যুদ্ধ মোকাবিলা, এলসি উত্তরণে সরকারের সঙ্গে নীতি প্রণয়ন ও কূটনৈতিক তৎপরতার বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তারা জানিয়েছেন। এছাড়া কাস্টমস ও ব্যাংক সমস্যা সমাধানে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও এসময় বলা হয়েছে।
১৪ দফা ইশতেহারে বলা হয়েছে, পোশাক খাতের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন, ক্রেতাদের থেকে ন্যায্য মূল্য আদায় ব্যবস্থা, নতুন বাজার সম্প্রসারণ ও অঞ্চলভিত্তিক সংকট মোকাবিলায় সেল গঠন। ক্রেতাদের অনৈতিক চাপের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফোরাম।
ফোরামের প্যানেল লিডার বলেন, আমরা সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত থেকে একটি স্বচ্ছ ও কর্মক্ষম বিজিএমইএ গড়ে তুলতে চাই। দায়িত্ব পেলে পরিচালকদের নির্ধারিত কারখানার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যাতে কারখানাগুলোর বিপদে-আপদে পাশে থাকতে পারে। পাশাপাশি, আমাদের শ্রমশক্তিকে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত করতে হবে।
ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দিনের পোশাক খাতের চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় রেখে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উদ্যোক্তা, দূরদর্শী ও তরুণদের বাছাই করে নিয়েছে জোটটি। প্রার্থী হিসেবে এসএমই উদ্যোক্তা যেমন রয়েছে, তেমনি নারী নেতৃত্বকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পেলে বিজিএমইএর হারানো সুনাম ও ভাবমূর্তি ফেরাতে পদক্ষেপ নেবে ফোরাম। ঢাকায় ২৬টি, চট্টগ্রামে ৯টি সহ ৩৫ পদে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে তারা, ব্যালট নম্বর পেয়েছে ১-৩৫।