পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ফোরাম জোট। ঢাকায় ২৬টি পরিচালক পদের মধ্যে অধিকাংশতে জয়ী এ জোটের প্রার্থীরা। আর চট্টগ্রামে ৯টি পরিচালক পদের মধ্যে ৫টিতে জিতেছে।
আগামী ২ জুন এই পরিচালকরা ভোট দিয়ে সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচন করবেন।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের মোট ভোট পড়েছে ২৫৪টি। এর মধ্যে বাতিল হয় ৬টি ভোট। মোট ৯টি পরিচালক পদের বিপরীতে ফোরাম জোট ৫টি পদে জয়ী হয়।
বিজিএমইএর ভোটগ্রহণের সময় ১৫ মিনিট বাড়িয়ে দেওয়া হয়। শনিবার বিকাল সোয়া ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে বিজিএমইএর নির্বাচন, ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ
এ ভোটের মাধ্যমে আগামী দুই বছরের (২০২৫-২৭ মেয়াদ) জন্য পোশাক শিল্পের মালিকরা তাদের নেতা নির্বাচিত করবেন।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্ল–’তে সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট চলে বিকাল সোয়া ৫টা পর্যন্ত।
এবারের বিজিএমইএর নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে লড়ছেন মোট ৭৬ প্রার্থী। নির্বাচনে এক হাজার ৮৬৪ জন গার্মেন্ট মালিক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এবারের নির্বাচনে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে প্রার্থী দিয়েছে। বাকি ৬ জন ঐক্য পরিষদের ব্যানারে স্বতন্ত্রভাবে ভোট করছেন। এবারের নির্বাচনে প্যানেল লিডার হিসেবে ফোরাম জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। পাশাপাশি সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম।
ফোরামের মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী বলেন, বিজিএমইএ দীর্ঘদিন দলীয়ভাবে পরিচালনা হয়েছে। এবার কোনো প্রভাব ছাড়া নির্বাচন হবে। ভোটাররাও আগ্রহ নিয়ে বসে আছে। জয়ের জন্য আমরা শতভাগ আশাবাদী।
ফোরাম নেতা ও প্রার্থী যমুনা গ্রুপের পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম রোজালিন যুগান্তরকে বলেন, আমি একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কামনা করছি। যাতে আমরা একটি নির্ভরযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য ফল পেতে পারি।
নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে। নির্বাচনে প্রার্থীদের আচরণে আমি খুশি। সকালে কিছু বহিরাগত ভেতরে জটলা পাকিয়েছিলেন। পুলিশের সহযোগিতায় তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা স্বচ্ছ নির্বাচনের একটা উদাহরণ তৈরির চেষ্টা করছি। যাতে আগামীতে নির্বাচন এ রকম হয়।’
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘এ নির্বাচন জাতির কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ছোট ছোট নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা দেশবাসীর কাছে এই মেসেজ দিতে চাই যে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন সবচেয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হবে। তার নমুনা হিসেবে আমরা এখন থেকে কাজ শুরু করছি।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিজিএমইএ’র সভাপতি আব্দুল মান্নান কচি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। অজ্ঞাতস্থান থেকে পদত্যাগ পাঠান তিনি। এরপর বিজিএমইএ’র দায়িত্ব নেন ডিজাইনটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার রফিকুল ইসলাম। খন্দকার রফিকের নেত্বত্বে পুনর্গঠিত বোর্ড পোশাক খাতের অস্থিতিশীলতা সামাল দিতে না পারায় ২০ অক্টোবর রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে এবারের তালিকা থেকে অস্তিত্বহীন ৬৩২ ভোটার বাদ পড়েছে। নির্বাচনে নিয়ন্ত্রণে অদৃশ্য শক্তির দৌড়ঝাঁপ নেই। ভোটগ্রহণকে ক্রেন্দ্র করে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এ নির্বাচনকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক, বাধাহীন ও গ্রহণযোগ্য করাকে সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং হিসেবে দেখছেন প্রার্থীরা। সাধারণ গার্মেন্টন মালিকরা আশা করছেন, উৎসবমুখর পরিবেশে পছন্দ মতো নিজেদের নেতৃত্ব বাছাই করে নিতে পারবেন। পতিত সরকারের সময় নিয়ন্ত্রিত আর কারচুপির যে নির্বাচন হয়েছে, এবার তার ব্যতিক্রম হবে।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।