জামালপুরের মেলান্দহে এক তরুণীকে বিয়ে করার কথা বলে বাড়িতে এনে পালিয়ে যান এক যুবক। পরে যুবকের পরিবারের লোকজন রাতভর ওই তরুণীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি জানিয়েছেন তরুণীর স্বজনেরা।
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, একই গ্রামের মঞ্জুরুল হোসেনের ছেলে শান্তর (২৬) সঙ্গে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে ওই তরুণীর (১৮)। ওই তরুণী দুই মাস আগে ঢাকার গাজীপুরে বড় বোনের সঙ্গে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন।
ওই তরুণী বলেন, ‘স্কুলে পড়ার সময় তিন বছর আগে থেকেই আমার সঙ্গে শান্ত প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর অভাবের সংসারে লেখাপড়া করতে পারিনি। দুমাস আগে আমি গাজীপুরে বড় বোনের সঙ্গে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেই। গত ২৯ সেপ্টেম্বর শান্ত আমার সঙ্গে দেখা করতে যায়। আমার বড় বোন বাসায় না থাকায় আমার সঙ্গে জোরপূর্বক অনৈতিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করে। আমি অস্বীকৃতি জানালে আমাকে মারধর করে।’
তরুণী আরও বলেন, ‘মারধরের একপর্যায়ে আমার নাকে ঘুষি মারলে রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে শান্তকে ধরে ফেলে। পরে সে আমাকে বিয়ে করবে বলে ফোনে তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে। পরে এলাকার লোকজন তার সঙ্গে আমাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গতকাল রাতে বাড়ির সামনে রেখে শান্ত পালিয়ে যায়। আমি তার বাড়িতে এসে তার মা-বাবাকে বিয়ের কথা বললে তারা আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে।’
ওই তরুণীকে মারধরের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাঁকে শান্তর বাড়িতে রেখে চলে যায়। বর্তমানে ওই তরুণী যুবকের বাড়িতে আছেন।
তরুণীর বাবা বলেন, ‘আমার চার মেয়ে। রিকশা চালিয়ে ও খেত খামারে কাজ করে ওদের মানুষ করেছি। আমার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করেছে আমি জানতাম না। আজ ভোরে খবর পাই আমার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে। দৌড়ে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
এলাকার লিটন সরকার বলেন, ‘আমি মেয়েটিকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় দেখে খুব কষ্ট পেয়েছি। এই কাজটা করা ঠিক হয়নি।’
মেলান্দহ থানার উপরিদর্শক (এসআই) তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে এসেছি। মেয়েটিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেছে। এ ব্যাপারে মেয়ের পরিবার থেকে আইনগত সহায়তা চাইলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’