বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার, বাজারজাতকরণ এবং তালিকাভুক্তি সনদ নিতে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি সংস্থাটির স্পেকট্রাম মনিটরিং বিভাগ থেকে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
নতুন নির্দেশিকার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার, বাজারজাতকরণ এবং তালিকাভুক্তি সনদ গ্রহণের নির্দেশিকা-২০২৪’। এটি জারির ফলে এর আগের জারিকৃত ‘আইওটি, আইএসএস ও রেডিও ইকুইপমেন্ট ইম্পোর্টার’ সংক্রান্ত সব নির্দেশিকাও রহিত (বাতিল) করা হয়েছে।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের পরিচালক সাজেদা পারভিনের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিশন থেকে বিভিন্ন প্রকার বেতার যন্ত্রপাতি যেমন- ট্রান্সিভার, ওয়াকি-টকি, রাউটার, আইওটি ডিভাইস, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ব্রডকাস্টিং যন্ত্রপাতি প্রভৃতি আমদানি, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের জন্য ইতিপূর্বে জারিকৃত ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ডিভাইস আমদানির নির্দেশিকা’, ‘ইনস্ট্রাকশন ফর প্রোভাইডিং সার্ভিস থ্রো ২.৪ ও ৫.৭ গিগাহার্জ ব্যান্ড ইন বাংলাদেশ’ এবং ‘রেডিও ইকুইপমেন্ট ইমপোর্টার’ নির্দেশিকাগুলোকে একীভূত করা হয়েছে। সবগুলোর সমন্বয়ে তৈরি করা ‘বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার, বাজারজাতকরণ এবং তালিকাভুক্তি সনদ গ্রহণের নির্দেশিকা-২০২৪’। এরই মধ্যে বিটিআরসি এই নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করে প্রয়োগের জন্য জারি করেছে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়ে নতুন নির্দেশিকার ফলে এর আগের নির্দেশিকাগুলোও রহিত (বাতিল) করা হয়েছে।
নতুন করে আমদানি করা বেতারযন্ত্রের ব্যাপারে নির্দেশিকা প্রণয়নের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তির কল্যাণে ব্যাপক রূপান্তর সাধিত হয়েছে। প্রযুক্তির এই ক্রমবর্ধমান উৎকর্ষের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বেতার যন্ত্রপাতির ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ওয়াকি-টকি, মোবাইল হ্যান্ডসেট, আইওটি ডিভাইস, রাউটার প্রভৃতির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই এসব বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি করা হতে শুরু করে গ্রাহক পর্যায়ে ব্যবহার পর্যন্ত সর্বত্র মনিটরিং বা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজনীয়তাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার বর্তমানে মোবাইল হ্যান্ডসেট স্থানীয়ভাবে উৎপাদন সংযোজন হওয়ায় আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশে কমে গিয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ অন্যান্য বেতার যন্ত্রপাতি বৈধ পথে আমদানি না হওয়ায় সরকার এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। আর এই নির্দেশিকা প্রণয়নের ফলে বৈধ পথে বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার, বিক্রয় ও বাজারজাতকরণের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে বিটিআরসি।
সেবা সহজ হবে, কমবে অবৈধ যন্ত্রের ব্যবহার
এর আগে কমিশন থেকে বিভিন্ন প্রকার বেতার যন্ত্রপাতি যেমন- ট্রান্সিভার, ওয়াকি-টকি, রাউটার, আইওটি ডিভাইস, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ব্রডকাস্টিং যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের জন্য আলাদা আলাদা নির্দেশিকা ছিল। ফলে বেতার যন্ত্রের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশিকা থাকায় নানাবিধ জটিলতার
সম্মুখীন হতে হতো। বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহারের বিষয়ে সুষ্পষ্ট ধারণা না থাকায় অবৈধভাবে বেতার যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যায়।
বিটিআরসি বলছে, এসব জটিলতা সহজ করতেই কমিশন থেকে প্রণীত নতুন এই নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। একই সাথে এই নির্দেশিকা জারির ফলে পূর্ববর্তী অন্যান্য নির্দেশিকাসমূহ অকার্যকর হয়ে গেছে বলেও জানানো হয়েছে।