ভারতে বিমান মহড়ায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করল বাংলাদেশ

ভারতের যোধপুরে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে বার্ষিক বিমান মহড়া কার্যক্রম তরঙ্গ শক্তির দ্বিতীয় পর্ব। গত ২৯ আগস্ট শুরু হওয়া এই মহড়া চলবে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক বিমান মহড়াটির এ পর্বে অংশ নেওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশেরও। তবে, সিদ্ধান্ত বাতিল করায় তাতে আর অংশ নেওয়া হচ্ছে না। অবশ্য মহড়ায় অংশ না নিলেও পর্যবেক্ষক হিসেবে কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাকে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট। মূলত, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সি-১৩০ পণ্যবাহী বিমানের অংশ নেওয়ার কথা ছিল এ মহড়ায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ভারতের প্রথম বড় বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক বিমান মহড়া তরঙ্গ শক্তির দ্বিতীয় পর্বের জন্য নিজেদের সি-১৩০ পরিবহন বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ঢাকা।

অবশ্য, বাংলাদেশ এ মহড়া পুরোপুরি বয়কট করছে না বলেই দাবি ভারতীয় প্রতিরক্ষা সংস্থার বেশ কয়েকটি সূত্রের। তারা বলছে, মহড়ায় অংশ না নিলেও পর্যবেক্ষক হিসাবে তিনজন সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাকে পাঠাবে বাংলাদেশ।

সূত্রগুলো দ্য প্রিন্টকে আরও জানিয়েছে, মহড়ায় বাংলাদেশ অংশ না নেওয়ায় এখন শ্রীলঙ্কা দুটি বি-২০০ সুপার কিং সামুদ্রিক নজরদারি বিমান নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করবে। যদিও এই মহড়ায় প্রথমে দেশটির বিমান পাঠানোর কথাই ছিল না।

উল্লেখ্য, ভারতে দুই দফায় বিমান মহড়া তরঙ্গ শক্তি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম দফা হয়েছে গত ৬ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। তাতে অংশ নেয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ আর এই মহড়ায় যোগ দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ঢাকা।

যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), জাপান প্রভৃতি দেশ ভারতে এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশের শাসন ক্ষমতায় পালাবদলের কারণে বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর রাতারাতি ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

সংবাদমাধ্যমটির দাবি, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ভালোভাবে নেয়নি। তার ওপর বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যা নিয়েও ভারতের দিকে আঙুল উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ভারতে বিমান মহড়া এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।