কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের স্টারলিংক।
মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট এবার প্রতিবেশী ভুটানেও চালু হয়েছে। আর বাংলাদেশে চালু হতে পারে চলতি বছরই। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা এখন ভুটানেও পাওয়া যাচ্ছে। মূলত স্থলভূখণ্ড, বায়ু পরিসর এবং সামুদ্রিক আরও অঞ্চলসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে লো-অরবিট, লো-লেটেন্সি স্যাটেলাইট এই ইন্টারনেট সেবা চালুর চেষ্টা করছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রযুক্তি সংস্থা স্পেসএক্স।
মূলত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে স্টারলিংক তার এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা কোথায় কোথায় পাওয়া যাচ্ছে তার একটি মাত্রচিত্র সামনে এনেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মঙ্গোলিয়া এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ভুটানও এখন এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেটে অ্যাক্সেস করতে পারছে।
মূলত বাংলাদেশে স্টারলিংকের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু নেই। তবে এই পরিষেবা চালু করার কাজ চলছে। দ্য হিন্দু বলছে, স্টারলিংক কোম্পানির এই প্রযুক্তি ভারতে চালুর বিষয়ে দেশটির নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন লাভের প্রক্রিয়া ঝুলে রয়েছে এবং মিয়ানমারে কবে এই পরিষেবা চালু হবে তা এখনও অজানা।
আর বাংলাদেশে চলতি বছরই এই ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর কথা রয়েছে। মূলত স্টারলিংক কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের বাজারে এই সেবা নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে আসছে। আর গত বছর তাদের একটি দল ঢাকায় এসে বিনিয়োগ বোর্ডের সাথে বৈঠক করে গেছে।
মাস্কেএর আগে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছিলেন, ২০২৪ সালের শেষের দিকে মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব জেলায় স্টারলিংক থেকে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সরঞ্জাম উদ্ধারের পরে ভারতে স্যাটেলাইট বিমগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মূলত এই সরঞ্জামগুলো জব্দ করার ফলে সশস্ত্র যোদ্ধারা স্টারলিংকে অবৈধভাবে প্রবেশ করতে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। যদিও এই পরিষেবা ভারতে পাওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, স্টারলিংক হচ্ছে বিশ্বের প্রথম ও বৃহত্তম কৃত্রিম উপগ্রহনির্ভর নক্ষত্রমণ্ডল। এই নেটওয়ার্ক স্ট্রিমিং, অনলাইন গেমিং, ভিডিও কলসহ নানা কাজের জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সরবরাহ করে থাকে। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে অবস্থিত বিভিন্ন স্যাটেলাইটের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে স্টারলিংক।
স্টারলিংক স্যাটেলাইট স্পেসএক্সের মহাকাশযানে করে পাঠানো হয়। স্টারলিংক সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীদের কাছে উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করে থাকে।
মূলত সাধারণ ইন্টারনেট সেবা যেখানে পৌঁছানো যায় না সেখানে সেবা দিতে সক্ষম স্টারলিংক। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সেবা দিতে পাঁচ বছর আগে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছিল স্টারলিংক। ইন্টারনেটের গতি অনেক বেশি হওয়ায় গভীর সমুদ্র বা পাহাড়ি এলাকার মতো দুর্গম জায়গাতেও গেমিং, স্ট্রিমিং ও দ্রুত ডাউনলোড নিশ্চিত করতে পারে তারা।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের কমপক্ষে ৫০টি দেশে স্টারলিংকের কার্যক্রম রয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে স্টারলিংকের প্রযুক্তি বাংলাদেশে এনে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সংস্থাটির উদ্দেশ্যই হলো- বিশ্বব্যাপী গ্রামীণ ও দুর্গম এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা।