বাজারে মুরগি, সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম ওঠানামা করলেও মাছের দাম দীর্ঘদিন ধরে চড়া অবস্থায় রয়েছে। সব ধরনের মাছই বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। এতে করে মাছপ্রিয় ক্রেতাদের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে। অনেকের অভিযোগ, বাজারে কোনো ধরনের নজরদারি নেই বলেই ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম ধরে রাখছে।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা চড়া যাচ্ছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে। আপাতত মাছের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনা নেই।
শুক্রবার (৯ মে) সকালে রাজধানীর রামপুরা-মালিবাগ এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
বাজারে কিছু দেশি মাছের দাম তুলনামূলক আরও বেশি। যেমন, বোয়াল বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায়, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে জাতীয় মাছ ইলিশের দাম সবসময়ই চড়া থাকে। আজকের বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৫০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর রামপুরা-মালিবাগ বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, মাংস, মুরগি, ডিম, সবজিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম ওঠানামা করে, কিন্তু ব্যতীক্রম শুধু মাছের বাজার। মাছের দাম দীর্ঘদিন ধরেই কমছে না। আজকেও বাজারে সব ধরনের মাছ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ মাছ কিনে খেতে পারছে না।
মালিবাগ বাজারে বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাছের বাজারে এভাবে চড়া দাম চললেও কেউ দেখছে না, কেউ কিছু বলছেও না। মনিটরিং না থাকার কারণে যে কেউ নিজের ইচ্ছামতো দাম বসিয়ে দিচ্ছে। বিক্রেতারা এমনভাবে কথা বলেন যেন আমরা কিনলে কিনি, না কিনলে অন্য অনেকেই আছে।
এদিকে মাছের দাম বাড়ার বিষয়ে রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, আসলে মাছের দাম একটু বেশি গেছে ঠিকই, তবে এর পেছনে কারণও আছে। ফিড বা খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই উৎপাদন খরচ বাড়ছে। চাষিরা বেশি দামে মাছ তুলছে, পাইকারিরাও দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আমাদের হাতে তেমন কিছু থাকে না।