মিল্টনের তাণ্ডবে বিদ্যুৎহীন ১১ লাখ গ্রাহক, জ্বালানি সংকট তুঙ্গে

যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হেনেছে চরম বিপজ্জনক হ্যারিকেন মিল্টন। ভারী বৃষ্টিপাত, ঝোড়ো বাতাস ও প্রাণঘাতী জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতার মধ্যে স্থানীয় সময় বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানে ঝড়টি।

মহাশক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হ্যারিকেন মিল্টনের তাণ্ডবে ইতোমধ্যেই ফ্লোরিডার ১১ লাখেরও বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন। এছাড়া জ্বালানি সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। অঙ্গরাজ্যটির এক-চতুর্থাংশ ফুয়েলিং স্টেশন জ্বালানি তেলশূন্য হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) পৃথক আপডেটে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা।

বিবিসি বলছে, ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যজুড়ে প্রবল ঝড়ের কারণে ব্ল্যাকআউট ক্রমেই বাড়ছে। পর্যবেক্ষণ সাইট পাওয়ারআউটেজ.ইউএস অনুসারে, অঙ্গরাজ্যজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এবং এখন পর্যন্ত ১১ লাখেরও বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ হারিয়েছেন।

এছাড়া নর্থ ক্যারোলিনায় প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহকও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই অঙ্গরাজ্যটি দুই সপ্তাহ আগে আঘাত হানা হ্যারিকেন হেলেনের কারণে এখনও বেশ বিপর্যস্ত।

এদিকে হ্যারিকেন মিল্টনের জেরে ফ্লোরিডায় জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ঝড় থেকে বাঁচতে হাজার হাজার বাসিন্দা তাদের গাড়ি নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করার পরে বুধবার বিকেলে ফ্লোরিডার প্রায় এক-চতুর্থাংশ পেট্রোল স্টেশনে জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে।

হ্যারিকেন মিল্টন মার্কিন এই অঙ্গরাজ্যের পশ্চিম উপকূলের কাছে ধেয়ে আসার সাথে সাথে উপকূলীয় অঞ্চলে ১০ লাখেরও বেশি লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের পাশাপাশি ভোগান্তির মুখে পড়েন বহু মানুষ।

ফলস্বরূপ ফ্লোরিডার প্রায় ৮ হাজার ফুয়েলিং স্টেশনের প্রায় ২৪ শতাংশ স্টেশনে বুধবার স্থানীয় সময় ১২টা নাগাদ জ্বালানি শেষ হয়ে যায় বলে মার্কেট ট্র্যাকার গ্যাসবাডি জানিয়েছে। টাম্পা-সেন্ট পিটার্সবার্গ এলাকায় জ্বালানি সংকট সবচেয়ে গুরুতর অবস্থায় রয়েছে।

সেখানে অর্ধেকেরও বেশি পাম্পে কোনও পেট্রোল নেই। এছাড়া ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে এমন অন্যান্য অঞ্চলগুলোও ব্যাপকভাবে জ্বালানি সংকটের কথা জানিয়েছে।

মূলত ফ্লোরিডা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম পেট্রোল গ্রাহক। মার্কিন এই অঙ্গরাজ্যটিতে কোনও শোধনাগার নেই, তাই স্থল বা সমুদ্রপথে আমদানি করা জ্বালানি চালানের ওপরই নির্ভর করতে হয় ফ্লোরিডাকে।