মেসির পছন্দের গোলের শিল্পকর্ম নিলামে, বিক্রি হলো আকাশচুম্বি দামে

সম্প্রতি পেশাদার ক্যারিয়ারে করা নিজের সেরা গোলটি বেছে নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। এরপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় সেই গোলটিকে ডিজিটাল শিল্পকর্মে রূপ দেন তুর্কি বংশোদ্ভূত আমেরিকান শিল্পী রেফিক আনাদোল। ‘অ্যা গোল ইন লাইফ’ নামে শিল্পকর্মটি গত ১২ জুলাই নিলামে তোলার পর ১০ দিন পর মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিমিয়ে বিক্রি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রীড়া সংবাদমাধ্যম‘দ্য অ্যাথলেটিক’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ব্রিটেনের নিলাম প্রতিষ্ঠান ‘ক্রিস্টিস’-এর তোলা নিলামে আর্জেন্টাইন মহাতারকা মেসির গোলের চিত্রকর্মটি ১৮ লাখ ৭০ হাজারে ডলারে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। তবে চিত্রকর্মটি কে বা কোন প্রতিষ্ঠান ক্রয় করেছে সেটি খোলাসা করা হয়নি।

আরও পড়ুনঃ টানা ৫ ম্যাচে জোড়া গোল, মেসি জাদুতে মায়ামির জয়

ছবি বিক্রির অর্থ অবশ্য মেসি বা শিল্পীর পকেটে যাচ্ছে না। আগেই জানানো হয়েছিল, নিলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থ ইন্টার মায়ামির ফাউন্ডেশনে দান করা হবে। ফাউন্ডেশনটি বিভিন্ন দাতব্য কাজে অর্থ ব্যয় করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, এল সালভাদর, হন্ডুরাস ও হাইতিতে শিক্ষার প্রসারে ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথ অংশীদারত্বে বিভিন্ন কর্মসূচি।

এআই ব্যবহার করে আঁকা ছবির জাদুঘর‘ডেটাল্যান্ড’ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রেফিক আনাদোল যুক্তরাষ্ট্রে নিজের নামেই একটি স্টুডিও বানিয়েছেন। সেখানেই বিভিন্ন যন্ত্র ও এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বখ্যাত এই শিল্পী কয়েক সপ্তাহ সময় নিয়ে মেসির পছন্দের গোলটির ত্রিমাত্রিক রূপ দেন।

নিলামের আগে ‘দ্য অ্যাথলেটিক’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্বখ্যাত এই শিল্পী, তার ইচ্ছা হলো এই শিল্পকর্ম যেন কোনো ব্যক্তির হাতে গিয়ে হারিয়ে না যায়। মানে, কোনো ব্যক্তির সংগ্রহশালাতে-ই যেন শুধু পড়ে না থাকে শিল্পকর্মটি। আনাদোলের যুক্তি, ‘এটা শুধু দুজন ব্যক্তির মাঝে সংযোগ নয়, এটা দুটি বিভাগের মাঝে সংলাপও। শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর সাক্ষাৎ নয়, খেলার সঙ্গে শিল্পের সাক্ষাৎ। এ কারণেই এটা এত সতেজ ও শক্তিশালী।’

এর আগে গত মে মাসে পেশাদার ক্যারিয়ারে করা সাড়ে আটশ’র বেশি গোল থেকে নিজের সেরা গোলটি বেছে নিয়েছিলেন মেসি। সে সময় এক সাক্ষাৎকারে আর্জেন্টাইন তারকা জানিয়েছিলেন, ২০০৯ সালের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচের ৭০ মিনিটে জাভি হার্নান্দেজের ক্রস থেকে হেডে করা গোলটিই সবচেয়ে প্রিয় তার।

সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি হয়তো আরও অনেক সুন্দর ও মূল্যবান গোল করেছি এবং সেগুলোর গুরুত্বপূর্ণও ছিল। কিন্তু ইউনাইটেডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হেডে করা ওই গোলটি সব সময় আমার প্রিয়। এটা সবচেয়ে সুন্দর ও অনন্য। কারণ হেডে করেছি, লাফিয়ে অনেক উঁচুতে উঠেছিলাম যেটা আমার ক্ষেত্রে বিরল।’

নিলামের পর কিউরেটর জিমেনা কামিনোস বলেছেন, ‘মেসির সবচেয়ে পছন্দের গোল থেকে এমন শিল্পকর্ম তৈরি হবে, সেটা শুধু হাজারো দর্শকদের আনন্দ দেবে না, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থাকেও এগিয়ে নেবে।’

গত ১২ জুলাই থেকে ক্রিস্টিসের ১০ম আর্ট‍+টেক সম্মেলনে তাদের নিউইয়র্ক শাখায় এই শিল্পকর্মটি প্রদর্শিত হয়। নিলাম প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল সেলসের ব্যবস্থাপক সেবাস্তিয়ান সানচেজ জানান, ১৫ লাখ ডলার থেকে এই শিল্পকর্মের দাম হাঁকা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ১০ দিন পর যেটি ১৮ লাখ ৭০ হাজারে ডলারে বিক্রি হয়েছে।

এর আগে ২০২২ বিশ্বকাপে মেসি যে ছয়টি জার্সি পরেছিলেন সেগুলোও নিলামে তোলা হয়েছিল। যা খেলাধুলায় সবচেয়ে দামি স্মারক হিসেবে বিক্রি হয়। ৭৮ লাখ ডলার দাম উঠেছিল জার্সিগুলোর।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ