যানজটের নগরী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। কমেছে মানুষের কোলাহল, হকারের হাঁকডাক আর যন্ত্রযানের হুইসেল, নেই চিরচেনা যানজট। পবিত্র ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে রাজধানী ছেড়েছেন অসংখ্য মানুষ। আবার অনেকে ছেড়ে যাচ্ছেন। ফলে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে এই মেগা শহর।
এদিকে ফাঁকা শহরে দাপটের সঙ্গে সব সড়কে ঘুরে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। অফিস-আদালত বন্ধ হওয়ায় যাত্রী কম থাকায় গণপরিবহনগুলোতে ফাঁকা সিট নিয়ে যেতে দেখা যায়।
সরেজমিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, ঝিগাতলা, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, মৎস্য ভবন এলাকায় দেখা যায় অন্যান্য দিনের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা কম। সড়কগুলো যাত্রীর তেমন চাপ দেখা যায়নি। বেশিরভাগ যানবাহনে রয়েছে যাত্রী সংকট, যাত্রীর অভাবে আসন ফাঁকা রেখেই গন্তব্যে যাচ্ছে যানবাহনগুলো। যাত্রী সংকটে এসব পয়েন্টে কিছু সময়ের জন্য বাসগুলোকে অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে। বাস ও লেগুনার স্টাফদের দীর্ষ সময় ধরে যাত্রীর জন্য ডাকাডাকি করতে শোনা গেছে।
আরও পড়ুনঃ ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা, স্টেশন-টার্মিনালে উপচে পড়া ভিড়
রাজধানীতে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও সড়কের কোথাও যানজটের চিত্র দেখা মেলেনি। তবে বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে স্বল্প সময়ের জন্য গাড়িগুলোকে থামতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে ফাঁকা রাস্তায় রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে। ভাড়া চালিত পাঠাও চালকদের যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাস ড্রাইভার সুমন মিয়া বলেন, গতকাল যাত্রীর চাপ ছিল। আজকে পুরো বাস ফাঁকা। যাত্রীর তেমন চাপ নেই। উল্টো সংকট আছে যাত্রীর। হাজিরা উঠবে কিনা টেনশন আছি। হয়তো টিপ কমিয়ে দিতে হবে।
ঝিগাতলার লেগুনার ড্রাইভার রবিউল হুসাইনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে যাত্রী নাই তার উপরে আবার বৃষ্টি হচ্ছে, একটা গাড়ি ভরতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের বেশি সময় লেগে যায়। যেখানে আগে সেটা ১০ থেকে ২০ মিনিটে হয়ে যেত। ঈদে যাত্রীদের চাপ কমে গেছে। আজকে নিয়মিত যাত্রীর চেয়েও কম।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক রিপন মিয়া জানান, যানজট নেই। যাত্রী যা আছে ভালোই ইনকাম হচ্ছে। নিয়মিত ভাড়ার সঙ্গে ৫/১০ টাকা ঈদের বকশিশও পাচ্ছি।
কারওয়ান বাজারের সিগন্যালে কথা হয় ফুটপাতের চা দোকানদার দেলোয়ার হোসেন সঙ্গে। তিনি এবার ঈদে বাড়ি যাননি। বরিশালে বাড়ি হলেও ঢাকাতে ঈদ উদযাপন করবেন। তিনি বলেন, যানজট ঠেলে বাড়ি যেতে ভালো লাগে না। ঈদের ছুটি শেষে বাড়িতে যাব। কাস্টমার তেমন নেই। ঈদের দিনও খোলা রাখবো। অন্য সময়ে এখানে অনেক যানজট থাকতো, আজকে দেখেন ফাঁকা। সবাই বাড়ির দিকে চলে যাচ্ছে। কালকে তো আরো ফাঁকা হয়ে যাবে। যতদিন মানুষ থাকবে না ঢাকা এরকম নিরিবিল থাকবে।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।