মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর ২৫ শতাংশ নতুন আমদানি কর আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন। নতুন এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও বিস্তৃত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেছেন, সর্বশেষ ঘোষিত এই শুল্ক আগামী ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে এবং পরের দিন থেকে যানবাহন আমদানিকারী ব্যবসার ওপর শুল্ক আরোপ শুরু হবে। অন্যদিকে যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক মে মাসে বা তার পরে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এদিকে শুল্কারোপের এই ঘোষণা দিয়ে মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে গাড়ি শিল্পের “অসাধারণ প্রবৃদ্ধি” ঘটবে। একইসঙ্গে এটি যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগকে আরও উৎসাহিত করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গাড়ি উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে, দাম বৃদ্ধি পাবে এবং মিত্রদের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেবে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৮০ লাখ গাড়ি আমদানি করেছে, যা বাণিজ্যে প্রায় ২৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মোট গাড়ি বিক্রয়ের প্রায় অর্ধেক।
বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ির শীর্ষ বিদেশি সরবরাহকারী হচ্ছে মেক্সিকো। তার পরেই রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, কানাডা এবং জার্মানি। ট্রাম্পের সর্বশেষ পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী গাড়ি বাণিজ্য এবং সরবরাহ শৃঙ্খলকে ভেঙে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে অনেক মার্কিন গাড়ি কোম্পানি মেক্সিকো এবং কানাডায়ও তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, যা এই তিন দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির শর্তাবলীর অধীনে প্রতিষ্ঠিত। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই আদেশ কেবল প্রস্তুত গাড়ির ক্ষেত্রেই নয়, গাড়ির যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে, যা প্রায়শই অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজনের আগে পাঠানো হয়।
এমন অবস্থায় বুধবার জেনারেল মোটরসের শেয়ার প্রায় ৩ শতাংশ কমে গেছে। এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তার পথ পরিবর্তন করার কোনও সম্ভাবনা আছে কিনা। জবাবে ট্রাম্প বলেন, “না। এটি স্থায়ী।”
দিনি আরও বলেন, “আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রে আপনার গাড়ি তৈরি করেন তবে কোনও শুল্ক নেই।”
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেছেন, ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় তার সরকার “সমস্ত বিকল্পই টেবিলে রাখবে”। মূলত জাপান বেশ কয়েকটি প্রধান মোটরগাড়ি শিল্পের জায়ান্টদের আবাসস্থল এবং পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি রপ্তানিকারক দেশ।