যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে একটি বাঁধ ভেঙে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে হঠাৎ করেই বাঁধটি ভেঙে যায় ও বিপর্যয় দেখা দেয়। এই ঘটনায় বর্তমানে সেখানে তল্লাশি অভিযান চলছে।
অবশ্য মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরবাত বাঁধের ধারণক্ষমতা ২৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার এবং পোর্ট সুদানের উপকূলীয় শহরে অবস্থিত এই বাঁধটি দেশটির পানীয় জলের প্রধান উৎস।
মূলত গত ১৬ মাস ধরে সুদানে গৃহযুদ্ধ চলছে। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত এই দেশটি এখন প্রবল বর্ষণ এবং বন্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আর এতে করে বহু মানুষ নিহত এবং আরও কয়েক হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বিবিসি বলছে, লোহিত সাগরের তীরবর্তী এই দেশটিতে এই বাঁধের পতনে খামার এবং বহু গ্রাম ভেসে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আলি ইসা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, লোকেরা ‘সাতটি গাড়িতে আটকে ছিল – তারা তাদের বের করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি’।
মুসা মোহাম্মদ মুসা নামে আরেকজন বলেন, বাঁধে ভাঙনের পর একটি এলাকায় ‘সমস্ত বাড়িঘর এবং সবকিছু ভেসে গেছে’ বলে তাকে বলা হয়েছে।
বেসরকারী মালিকানাধীন রেডিও দাবাঙ্গা ওয়েবসাইট অনুসারে, ভারী বৃষ্টিপাত সুদানে ফাইবার-অপটিক তারেরও ক্ষতি করেছে, যার ফলে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের অনেক অংশে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদপত্র মেরদামীক জানিয়েছে, পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ার পর যারা আটকে পড়েছিল তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে বিমানবাহিনী। সুদানের পানি কর্তৃপক্ষের পরিচালক ওমর ইসা তাহির স্থানীয় সংবাদ সাইট আখবারকে বলেছেন, বন্যা ‘পুরো এলাকা নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে’।
সেনাপ্রধান আবদুল-ফাত্তাহ আল-বুরহান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে, সেনাবাহিনী সমস্ত ‘ফেডারেল এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে এই অঞ্চলের নাগরিকদের সাহায্য করার জন্য এবং তাদের সমর্থন ও সহায়তা দেওয়ার জন্য’ আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, আধাসামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এবং সুদানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গত বছরের এপ্রিল থেকে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে সুদান যুদ্ধে নিমজ্জিত রয়েছে।
লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে এবং একাধিক প্রদেশে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। এমন অবস্থায় চরম এই আবহাওয়া দেশটিতে বিরাজমান খাদ্য ঘাটতিকে কেবল আরও বাড়িয়ে তুলবে।