রানিং স্টাফদের দাবি মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই : রেলপথ উপদেষ্টা

রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন প্রদান এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই বলে জানিয়েছেন রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপদেষ্টার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এ কথা জানান তিনি।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ওদের দাবি ছিল। সেটি আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে পাঠিয়েছি। অর্থ বিভাগ এটা কিছুটা কনসিডার করে পাঠিয়েছে। এটাতো আমাদের হাতে নাই। এখন ওরা (রানিং স্টাফরা) যদি এমন করে, তাহলে কিভাবে হবে?

তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হাতে তো নাই। সরকারের তো এটি দেওয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে। এটা তো শুধু রেলওয়ের দাবি না, এ রকম অনেক বিভাগের দাবি আছে। এজন্য আমরা আলোচনা করছি, দেখা যাক কী হয়।

এদিকে দাবি আদায়ের বিষয়ে অনড় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি। সমিতির নেতারা বলছেন, কর্মচারীদের অবসরোত্তর ৭৫ শতাংশ মাইলেজ মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান প্রায় ১৬০ বছর ধরে চলমান ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে রেলওয়ের কোডিফাইড রুল অমান্য করে রানিং স্টাফদের পার্ট অব পে হিসেবে গণ্য মাইলেজ, যা যুগ যুগ ধরে বেতন খাতের অংশ ছিল, সেখান থেকে সরিয়ে টিএ খাতে নেওয়ার ফলে জটিলতা তৈরি হয়।

এরপর ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়।

তারা আরও জানান, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১০ এপ্রিল রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে অর্থ মন্ত্রণালয় ১৩ এপ্রিল চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেয়। পরে তৎকালীন রেলমন্ত্রী ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১১ জুন তৎকালীন রেলওয়ের মহাপরিচালক স্পষ্ট করে রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই বছর ১৮ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আবারও আপত্তি জানায়। ফলে রানিং স্টাফদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

এর আগে কর্মসূচির বিষয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, গত ডিসেম্বর মাসে আন্দোলন করলে রেলওয়ের কর্মকর্তারা আমাদের ডাকেন। তারা আমাদের কাছে ১০ দিন সময় চেয়েছিলেন। আমি তাদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের জন্য কিছু করতে পারলেন না। পরে ১ জানুয়ারি জানিয়ে দিলাম, আমরা আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চালাব না।