লবণ ছাড়াও যেসব খাবার উচ্চ রক্তচাপের কারণ

উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার আজকাল প্রায় ঘরে ঘরেই পরিচিত এক স্বাস্থ্য সমস্যা। আগে এটি বেশি দেখা যেত বয়স্কদের মধ্যে, কিন্তু এখন তরুণরাও এর ঝুঁকিতে পড়ছেন। অনিয়মিত জীবনযাপন, মানসিক চাপ, অলসতা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

যথাযথভাবে যত্ন না নিলে এই সমস্যা থেকে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, এমনকি কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই শুরু থেকেই এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায় উচ্চ রক্তচাপ। অনেকেই মনে করেন শুধু লবণই এই রোগের প্রধান কারণ, কিন্তু লবণ ছাড়াও কিছু খাবার রয়েছে, যা রক্তচাপ বাড়াতে সহায়তা করে। চলুন জেনে নিই এমন কিছু খাবারের কথা, যেগুলো উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের এড়িয়ে চলাই ভালো।

প্রক্রিয়াজাত খাবার: নীরব বিষ
চিপস, নুডলস, প্যাকেটজাত বিস্কুট, পাস্তা, স্ন্যাকস—এসব খাবারে থাকে অতিরিক্ত সোডিয়াম, ট্রান্স ফ্যাট ও সংরক্ষণকারী রাসায়নিক পদার্থ। নিয়মিত এসব খাবার খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। তাই এমন খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো।

ভাজা ও ফাস্ট ফুড: স্বাদের মোহে বিপদ
পাকোড়া, সমুচা, পিৎজা, বার্গার বা অন্যান্য ভাজা খাবার যেমন সুস্বাদু, তেমনি স্বাস্থ্যহানিকর। এসব খাবারে থাকে উচ্চমাত্রায় তেল, লবণ, ময়দা এবং ট্রান্স ফ্যাট, যা রক্তনালিকে সংকুচিত করে রক্তচাপ বাড়িয়ে তোলে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এগুলো একেবারেই অনুপযুক্ত।

আচার ও পাপড়: অতিরিক্ত সংরক্ষণে লুকানো বিপদ
আচার, ঘরে তৈরি হোক বা কেনা, এতে থাকা তেল, লবণ ও ভিনেগার রক্তচাপ বাড়ায়। আবার অনেকেই পাপড়কে হালকা স্ন্যাকস ভাবলেও এতে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। নিয়মিত এসব খাওয়া ধীরে ধীরে রক্তচাপ বাড়াতে পারে।

অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার: শুধু ডায়াবেটিস নয়, রক্তচাপও বাড়ায়
চিনি শুধু ডায়াবেটিস নয়, উচ্চ রক্তচাপেরও কারণ। অতিরিক্ত মিষ্টি যেমন চকলেট, মিষ্টি, কেক বা অন্যান্য বেকারি আইটেম খেলে ইনসুলিন দ্রুত বেড়ে গিয়ে রক্তনালিকে সংকুচিত করে তোলে। এর ফলে রক্তচাপ বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি মিষ্টি খান, তাদের উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ।

পরামর্শ
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শুধু ওষুধ নয়, খাদ্যাভ্যাসেও সতর্কতা জরুরি। প্রক্রিয়াজাত, অতিমিষ্ট, অতিলবণাক্ত এবং তেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। তাজা ফল, সবজি, পানি ও ফাইবারযুক্ত খাবার বেশি করে ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন।