শ্রীলঙ্কার বামপন্থি প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শপথ নিয়েছেন। দ্বীপদেশটিতে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের পর সৃষ্টি হওয়া জনগণের প্রচণ্ড ক্ষোভের কারণেই গত শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় লাভ করেন তিনি। খবর এএফপির।
আত্মস্বীকৃত মার্কসপন্থি অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে প্রতিনিধিত্ব করছেন পিপলস পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (জেভিপি)। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ১৩ লাখেরও বেশি ভোট পেয়েছেন।
এক সময়ের প্রান্তিক রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত এই ব্যক্তির দল দুটো ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিল, যার ফলে ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল। ২০২২ সালে দেশটির অর্থনৈতিক মন্দার পর থেকে সাধারণ শ্রীলঙ্কাবাসীর ওপর নেমে আসা কষ্টের কারণে এই নেতার প্রতি সমর্থন বাড়তে থাকে।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর গতকাল রোববার ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে বলেন, তার এই বিজয় বহু লোকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত। দীর্ঘ এই সংগ্রামের পেছনে রয়েছে বহু লোকের ঘাম, অশ্রু ও জীবনদানের মতো ঘটনা। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা শ্রীলঙ্কার নতুন ইতিহাস রচনার জন্য একত্রিত হয়েছি।’
আজ সোমবার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে উপনিবেশ আমলের প্রেসিডেন্ট সচিবালয়ে শপথ গ্রহণ করেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের স্থলাভিষিক্ত হবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে। বিক্রমাসিংহে এমন একটা সময়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন দ্বীপদেশটির সরকার প্রথমবারের মতো বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়। খাদ্য, জ্বালানি তেল ও ওষুধের মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সংকটের কারণে কয়েকমাসের অবর্ণনীয় কষ্টের পর গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাসীন সরকারের পতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন বিক্রমাসিংহে। তার সময়ে আইএমএফের নির্দেশিত বেইল আউট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে গিয়ে ৭৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ কর বাড়িয়ে দেন এবং সরকারি ব্যয় সংকোচন ও কৃচ্ছ্রতা কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তার নীতিমালার কারণে অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসে, কিন্তু জীবনধারনের জন্য লাখ লাখ নাগরিককে সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
তবে দিশানায়েকে দেশকে বিপদ থেকে উত্তরণে আইএমএফের প্যাকেজ অনুসরণ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে তার পূর্বসূরী যেসব শর্ত ও আদেশ মেনে কাজ চালিয়ে যাবেন বলে মতৈক্য হয়েছিল, তাতে বেশকিছু পরিবর্তন আনবেন এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তার সরকারের প্রথম কাজটি হবে কর কমানো।