শরীরে পানি জমলে বা শরীর ফুলে গেলে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। শরীর ফোলা বা পায়ে পানি আসার নানা কারণ রয়েছে। এটি অবহেলা করা উচিত নয়, কারণ এটি অনেক গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে। শরীরে পানি জমার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো—
হৃদযন্ত্রের সমস্যা
হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে গেলে, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত বা ভাল্বের সমস্যার কারণে শরীরে পানি জমতে পারে। এতে পা, পেট ও বুকে পানি জমে যায়। এসব ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, বুক ধড়ফড় করা, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
লিভারের সমস্যা
লিভার সিরোসিস হলে প্রথমে পেটে, পরে পা ও বুকে পানি জমতে পারে। হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস, অতিরিক্ত মদ্যপান বা লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে এই সমস্যা হতে পারে। এতে খাবারে অরুচি, হলুদ প্রস্রাব, রক্ত বমির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
কিডনির সমস্যা
নেফ্রোটিক সিনড্রোম, নেফ্রাইটিস বা কিডনি বিকল হলে প্রথমে মুখ ফুলে যায়, এরপর পা ও বুকে পানি জমে। এসব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া, বমি বমি লাগা, খাবারে অরুচি, প্রস্রাবের রং ঘন বা ফেনাযুক্ত হওয়া ও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
রক্তে আমিষের মাত্রা কমে যাওয়া
পর্যাপ্ত খাবার না খাওয়া, হজমে সমস্যা, খাদ্যনালীর মাধ্যমে অতিরিক্ত আমিষ বেরিয়ে যাওয়া বা কিডনির মাধ্যমে আমিষের ক্ষতি হলে রক্তে আমিষের মাত্রা কমে যায়। এতে পা, পেট ও বুকে পানি জমতে পারে।
থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
শরীরে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা কমে গেলে পায়ে পানি আসতে পারে। এই রোগে গলগণ্ড হওয়া, ঠান্ডা অনুভব করা, ওজন বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত মাসিক স্রাব ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
নির্দিষ্ট কিছু ব্যথানাশক ওষুধ যেমন ডাইক্লোফেনাক, ন্যাপরোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, ইটোরিকক্সিব পায়ে পানি জমার কারণ হতে পারে। এছাড়া, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ যেমন নিফেডিপিন ও অ্যামলোডিপিন গ্রহণ করলেও পায়ে পানি জমতে পারে।
যদি শরীরে পানি জমার লক্ষণ দেখা দেয়, তবে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।