অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মুখে ঢাকা সিটি কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় খোদ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেই নোটিশ দিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার কলেজ একদিনের ছুটি ঘোষণা দিয়েছেন। এতে তিনি ছুটির জন্য ‘অনিবার্য কারণ’ উল্লেখ করেছেন।
মাত্র ২ লাইনের ওই নোটিশে বলা হয়েছে, অনিবার্য কারণবশত আগামীকাল (২৯ অক্টোবর) কলেজের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।
নোটিশটির অনুলিপি উপাধ্যক্ষ, বিভাগীয় প্রধান, জ্যেষ্ঠ শিক্ষক, কো-অর্ডিনেটর, পরীক্ষা কমিটি এবং অফিস সুপারিনটেনডেন্টকে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ নিয়ামুল হক এবং উপাধ্যক্ষ মো. মোখলেছুর রহমানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এতে কলেজের উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় তাদের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
পরে দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল কলেজের নিচতলার লাউঞ্জে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। তখন বেশ কয়েকজন শিক্ষককে ‘অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষকে পদত্যাগ করতে হলে আমরা ২১০ জন শিক্ষক একসাথে পদত্যাগ করব’— এমন কথা বলতে শোনা যায়।
আলোচনায় শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে —
১. নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে হবে।
২. ৩ মাসের মধ্যে বহিষ্কৃত সুমন স্যারকে পুনর্বহাল করতে হবে।
৩. মোশাররফ স্যারকে পুনর্বহাল করতে হবে।
৪. কায়কোবাদ স্যারের নামে মিথ্যাচার প্রত্যাহার করতে হবে।
৫. জাহাঙ্গীর স্যারকে আজকের মধ্যে বহিষ্কার করতে হবে।
৬. সোবহান স্যারের বহিষ্কার করতে হবে।
৭. আন্দোলনকারীদের ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা যাবে না।
পরে এসব দাবির ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা সন্তোষজনক উত্তর না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে সব শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়ে লাউঞ্জের সামনে এসে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন এবং কক্ষের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে ভেতর থেকে গেট লাগিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে শিক্ষকরা দোতলায় উঠে যান। এ সময় সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে শিক্ষার্থীরা দোতালায় উঠতে চাইলে সেনাবাহিনী ভেতর থেকে গেট লাগিয়ে দেয়।
তবে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না।