শ্রীপুরে গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা, স্বামী আটক

গাজীপুরের শ্রীপুরে স্মৃতি রানী সরকার (২৬) নামে এক গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বত্তরা। সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে শ্রীপুরের বরমী বাজার কামার পট্টি এলাকায় নিমাই চন্দ্র সন্ন্যাসীর বসতবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল।

নিহত স্মৃতি রানী সরকারের স্বামী কাব্য সরকার। তিনি বরমী ইউনিয়নের বরমী বাজার সংলগ্ন কামারপট্টি গ্রামে মামা নিমাই চন্দ্র বাড়িতে বসবাস করতেন।

শ্রীপুর উপজেলা হিন্দু কমিউনিটি সাধারণ সম্পাদক সুমন কর্মকার বলেন, আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক যুবতীকে গলা কেটে হত্য করা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভোর ৫টার দিকে বাসায় এসেছি। মর্মান্তিক এ ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি।

নিহতের ছোট ভাই হৃদয় সরকার বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের এক ঘণ্টা আগে আপা আমাকে ফোন করে জানায় তার স্বামী ইন্ডিয়া যাওয়া জন্য রওনা হয়েছে। এক ঘণ্টা পর আপুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফোন করে জানায় বাড়িতে প্রবেশ করে কারা যেন আপুকে কুপিয়েছে। এরপর আমরা দ্রুত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে মরদেহ দেখতে পাই। আপুকে ওরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার পর গলা কেটে হত্যা করে।’

নিহতের নানিশাশুড়ি রূপকোনা বলেন, ‘প্রতিদিন ভোরে আমি বাজারের মন্দিরে পূজা দিই। এ জন্য একটু আগেই আমাকে ঘুমাতে হয়। আমি পাশের ঘরে ঘুমের প্রস্তুতি সেরে বিছানায় শুয়ে ছিলাম। স্মৃতি তার দেড় বছর বয়সী ছেলে শ্রেয়ানকে নিয়ে তার ঘরে ছিল। হঠাৎ স্মৃতি দিদা বলে চিৎকার দেয়। দ্রুত আমি ঘরের বাইরের বারান্দায় এসে দেখি স্মৃতি বসে আছে। হঠাৎ দেখি সে বারান্দায় লুটিয়ে পড়ে। লাইটের সুইচ অন করে দেখি পুরো শরীর রক্তাক্ত। তবে কাউকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখিনি। এরপর আমি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ’

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ বলেন, হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ধারালো দা ও জুতা জোড়া উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’