সপ্তাহের শেষদিন দাপট দেখালো ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে অব্যাংকি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক কোম্পানিগুলো এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি সাড়ে ৯০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেইসঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা নয় কার্যদিবস শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বাড়লো।

আরও পড়ুনঃদরপতনে ধুঁকছে পুঁজিবাজার, শেষ কার্যদিবসে সূচক হারাল ৫৪ পয়েন্ট

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে প্রথম ৫ মিনিটের লেনদেন শেষ হতেই বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যায়। এ সূচকের উত্থান তো পরক্ষণেই পতন, এভাবেই চলে লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টা।

বাজারের এ অস্থিরতার মধ্যেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে একের পর এক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক কোম্পানি। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে দাম কমার তালিকা বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও প্রধান মূল্য বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৬১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭১টির। আর ৬৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে তালিকাভুক্ত ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সবগুলোর শেয়ার দাম বেড়েছে। আর ২১টি ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৫টির দাম কমেছে।

এদিকে ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৮৪টির দাম কমেছে এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৭টির দাম কমেছে এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪০টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৬টির দাম কমেছে এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৮৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। তবে ডিএসইতে সাড়ে ৯০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৫১ কোটি ৭৮ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৮৬ কোটি ৫৩ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির ৩৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ২৯ লাখ টাকার। ২৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, উত্তরা ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়া।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১০৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৯টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ