সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করে দেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা, উদ্ভাবন ও মানসম্পন্ন সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গড়ে তুলেছে। তিন দশকে ব্যাংকটি রূপ নিয়েছে একটি আধুনিক, ভবিষ্যৎমুখী আর্থিক প্রতিষ্ঠানে, যার মূল লক্ষ্য ছিল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, টেকসই প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল উদ্ভাবন এবং নিরবচ্ছিন্ন গ্রাহকসেবা। দেশজুড়ে বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্ক ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবার মাধ্যমে ব্যাংকটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
আজ সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসির ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, একটি দীর্ঘ যাত্রার গৌরবময় অধ্যায়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সাউথইস্ট ব্যাংক আয়োজন করে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান, যা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সম্মানিত সচিব নাজমা মোবারেক। তিনি ব্যাংকটির আর্থিক ও সামাজিক খাতে অব্যাহত অবদানকে সাধুবাদ জানান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ জাকির হোসাইন চৌধুরী। ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ কাশেম এই দীর্ঘ যাত্রায় গ্রাহক, অংশীদার ও সব কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘সততা, আস্থা আর উদ্ভাবনের পথ ধরেই আমাদের এগিয়ে চলা।’ এছাড়াও মূল্যবান বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারপারসন রেহানা রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আবিদুর রহমান চৌধুরী।
সাউথইস্ট ব্যাংকের গৌরবময় পথচলা যার হাত ধরে তিনি হলেন এম এ কাশেম, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা পরিচালক। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে চারবার দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংস্থা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সফল সভাপতি ছিলেন তিনি। জনহিতৈষী, বিশিষ্ট শিল্পপতি কাশেম একজন শিক্ষার নিবেদিতপ্রাণ পৃষ্ঠপোষক, বিশিষ্ট সমাজসেবী এবং একজন সক্রিয় সমাজকর্মী। এছাড়াও দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিত্বকারী অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি (এপিইউবি) সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
কাশেম দীর্ঘ ১৭ বছর উপমহাদেশের ভেষজ ওষুধের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। একজন প্রথিতযশা ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি এফবিসিসিআইয়ের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির হয়ে বিশ্বের সব বড় শহরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।
সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রাণপুরুষ এম এ কাশেম শুরু থেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন এমন একটি ব্যাংকের, যা শুধু আর্থিক সেবা নয়, সমাজের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে সাউথইস্ট ব্যাংক হয়ে উঠেছে একটি নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান, যা প্রতিনিয়ত মানুষের আস্থা অর্জন করে এগিয়ে যাচ্ছে উচ্চতার শিখরে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, নিষ্ঠা ও ভালোবাসার কারণেই ব্যাংকটি শত প্রতিকূলতার মধ্যেও টেকসই উন্নয়ন অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তিনি কর্মীদের এই অবদানের জন্য গভীর প্রশংসা করেন এবং তাদের ব্যাংকের প্রতি ভালোবাসা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
এই ৩০ বছরের প্রাপ্তির পেছনে যারা আছেন- প্রতিটি গ্রাহক, অংশীদার, কর্মকর্তা ও শুভানুধ্যায়ীÑ তাদের প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক জানায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। গ্রাহকের আস্থা ছিল ব্যাংকের চালিকাশক্তি, গ্রাহকের ভালোবাসাই ব্যাংকের পথচলার অনুপ্রেরণা। মূল্যবোধকে আঁকড়ে ধরে, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে, সাউথইস্ট ব্যাংক এগিয়ে যাচ্ছে এক নতুন প্রত্যয়েÑ সেবা দিতে, সম্ভাবনা গড়তে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে।
এছাড়াও ওই অনুষ্ঠানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, ব্যাংকের সম্মানিত গ্রাহক, শিল্পী-সাহিত্যিক, অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যাংকের ঢাকা জেলার নির্বাহী-কর্মকর্তা ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।