বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) বলেছে, “সিন্ডিকেট ভাঙুন, প্রান্তিক খামারিদের অধিকার নিশ্চিত করুন।””খামারি বাঁচলে, পোল্ট্রি শিল্প বাঁচবে।”
আজ শনিবার বিপিএ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছে সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) বিশ্বাস করে, দেশের পোল্ট্রি শিল্পের সাফল্যের মূলে রয়েছে প্রান্তিক খামারিরা। কিন্তু বর্তমানে এই খাত কর্পোরেট সিন্ডিকেটের শোষণের কবলে পড়েছে। সিন্ডিকেটের শোষণ থেকে মুক্তি পেতে, খামারিদের অধিকার আদায়ে বিপিএ সবসময় খামারিদের পাশে রয়েছে।
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য (বিপিএর পর্যবেক্ষণ):
অস্বাভাবিক ফিড ও বাচ্চার দাম: কর্পোরেট সিন্ডিকেট ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দিয়ে খামারিদের সংকটে ফেলছে।
ন্যায্যমূল্যের অভাব: খামারিরা তাদের উৎপাদিত ডিম ও মুরগির সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না, অথচ বাজারে ভোক্তা উচ্চমূল্যে কিনছে।
প্রান্তিক খামারিদের শোষণ: সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে প্রান্তিক খামারিরা প্রতিনিয়ত লোকসানের মুখে পড়ছেন, যার ফলে তারা আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন।
প্রান্তিক খামারিদের অবদান (বিপিএর মতে):
১. দেশের খাদ্য নিরাপত্তা: প্রান্তিক খামারিরা দেশের ডিম ও মুরগির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়ক।
২. অর্থনীতির চালিকা শক্তি: পোল্ট্রি শিল্পে খামারিদের ভূমিকা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে, বিশেষ করে কৃষি খাতে তাদের অবদান অপরিসীম।
৩. কর্মসংস্থান সৃষ্টি: পোল্ট্রি শিল্পে শিক্ষিত বেকার নারী-পুরুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যা এখন সিন্ডিকেটের শোষণের কারণে চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
বিপিএর দাবি:
১. ফিড ও বাচ্চার দাম নিয়ন্ত্রণ করুন: সিন্ডিকেটের অযৌক্তিক দাম বৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে এবং সঠিক দাম নির্ধারণ করতে হবে।
২. ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন: খামারিদের উৎপাদিত ডিম ও মুরগির ন্যায্যমূল্য দিতে হবে।
৩. সিন্ডিকেট ভেঙে সরকারের মনিটরিং বাড়ান: সিন্ডিকেটের প্রভাব মোকাবেলায় শক্তিশালী নজরদারি চালু করতে হবে।
৪. সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি প্রদান করুন: খামারিদের উন্নতির জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. পোল্ট্রি শিল্পের জন্য স্বচ্ছ নীতিমালা প্রণয়ন করুন: পোল্ট্রি শিল্পে প্রান্তিক খামারিদের জন্য সুনির্দিষ্ট, স্বচ্ছ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
সরকারের প্রতি বিপিএর আহ্বান:
সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিন: কর্পোরেটদের অযৌক্তিক নিয়ন্ত্রণ ভেঙে প্রান্তিক খামারিদের জন্য নিরাপদ ও ন্যায্য বাজার নিশ্চিত করতে হবে।
প্রান্তিক খামারিদের জন্য ভর্তুকি নিশ্চিত করুন: পোল্ট্রি খামারিদের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা এবং ভর্তুকির ব্যবস্থা করা দরকার।
উৎপাদক ও ভোক্তার মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করুন: খামারিদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
উন্নত প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুন: পোল্ট্রি শিল্পের আধুনিকীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
বিপিএর আহ্বান:
👉 আগামী পহেলা জানুয়ারি ২০২৫ তারিখের মধ্যে সকল খামারি সঙ্ঘবদ্ধ হন।
👉 সকল জেলা ও উপজেলায় বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন করুন।
👉 আপনার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হোন।
👉 ভুল প্রলোভনে বিভ্রান্ত হবেন না, নিজ সিদ্ধান্ত নিজেই নিন।
খামারিদের জন্য আন্দোলনের স্লোগান (বিপিএর পক্ষ থেকে):
১. “সিন্ডিকেট ভাঙুন, খামারি বাঁচান।”
২. “ন্যায্য মূল্য চাই, খামারিদের মুক্তি চাই।”
৩. “ফিড ও বাচ্চার দাম কমাও, সিন্ডিকেট হটাও।”
৪. “কর্পোরেট দখলদারিত্ব মানি না, মানবো না।”
৫. “একসঙ্গে লড়ি, অধিকার গড়ি।”
৬. “প্রান্তিক কৃষক বাঁচলে, অর্থনীতি বাঁচবে।”
৭. “ন্যায্যতা আনুন, পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা করুন।”
৮. “খামারি বাঁচলে, দেশ বাঁচবে।”
৯. “আমরা খামারি, আমরা লড়বো।”
১০. “আজকের লড়াই, ভবিষ্যৎ গড়াই।”
বিপিএর বার্তা:
প্রিয় খামারিরা, আজকের লড়াই আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সবসময় প্রান্তিক খামারিদের পাশে রয়েছে।
“প্রান্তিক খামারি বাঁচলে, পোল্ট্রি শিল্প বাঁচবে। আর পোল্ট্রি শিল্প বাঁচলে, বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবে।”
সিন্ডিকেট মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আসুন একতাবদ্ধ হই। বিপিএর নেতৃত্বে ন্যায়সংগত পোল্ট্রি শিল্প প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে চলুন।