সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ১৮৫

রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশকে জয়ের ভিত দিয়েছিলেন স্পিনাররা। শেষদিনে সাকিব আল হাসান আর মেহেদি হাসান মিরাজরা পেয়েছিলেন ৭ উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টে এসে সেই চিত্রনাট্যের কেবল নায়কের বদল হলো। বাংলাদেশের পেসাররা দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের প্রমাণ করেছিলেন। তারই পূর্ণাঙ্গ এক রূপ দেখা গেল এদিন এসে। চতুর্থ দিনে পাকিস্তানের ৮ উইকেট নিলেন পেসাররা।

নাহিদ রানা এবং হাসান মাহমুদ দুজনেই উপহার দিয়েছেন দারুণ স্পেল। হাসানের ফাইফার পূর্ণ হয়েছে শেষ উইকেট নিয়ে। নাহিদের উইকেট সংখ্যা ৪।পাকিস্তানের ব্যাটারদের মধ্যে মোহাম্মদ রিজওয়ান আর সালমান আলী আঘা দুজনেই পরীক্ষা নিয়েছেন কেবল। তাদের সুবাদেই পাকিস্তান গিয়েছে ১৭২ রান পর্যন্ত। বাংলাদেশের সামনে দ্বিতীয় টেস্ট আর সিরিজ দুটোই জয়ের সুযোগ থাকছে। টার্গেট ১৮৫ রান।

চতুর্থ দিন সকালে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে এসেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ, সঙ্গে ৬ রান নিয়ে অপরাজিত সাইম আইয়ুব। দিনের নবম ওভারে পাকিস্তানের প্রথম উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদকে ড্রাইভ করতে গিয়ে মিড অফে নাজমুল হোসেনের দারুণ ক্যাচে ফিরেছেন সাইম আইয়ুব। সাইম আগের দিনের ৬ রানের সঙ্গে যোগ করেন আরও ১৪ রান। ৫০ রানে পাকিস্তানের ৩য় উইকেটের পতন ঘটে।

টানা ৬ ওভার তাসকিনের স্পেল শেষে আক্রমণে এসেই উইকেট পেলেন নাহিদ রানা। শান মাসুদ কাট করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটের পেছনে থাকা লিটন দাসের কাছে। ৬২ রানে ৪ উইকেটের পতন।

খানিক বাদেই ফিরলেন বাবর আজমও। উইকেট সেই নাহিদ রানার। স্লিপে ক্যাচ নিয়েছেন সাদমান ইসলাম। ফোর্থ স্ট্যাম্পে থাকা বলটা ফ্রন্টফুটে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। তবে দেরি করে ফেলেছিলেন। তাতেই নাহিদ পেলেন নিজের দ্বিতীয় উইকেট। ৫ উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ ফেলেছে টাইগারদের পেস ইউনিট। ৬ষ্ঠ উইকেটের দেখা পেতেও খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি। প্রথম ওভারে শান মাসুদ, দ্বিতীয় ওভারে বাবর আজমের পর তৃতীয় ওভারের শেষ বলে সৌদ শাকিলকে ফেরান নাহিদ রানা।

চলতি সিরিজে ব্যাট হাতে সবচেয়ে বেশি রান তুলেছেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান। প্রথম টেস্টেও বাংলাদেশ আর জয়ের মাঝে তিনিই ছিলেন বাঁধা। আজও ৮১ রানে ৬ উইকেটের পর আবারও পাকিস্তানের হয়ে প্রাচীর হয়ে গেলেন সেই রিজওয়ান।

প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন। নাহিদ রানার বলে সহজ ক্যাচ নেয়া হয়নি সাদমান ইসলামের। এরপর থেকেই রিজওয়ান ক্রিজে সময় নিয়ে থিতু হয়েছেন। ভুগিয়েছেন বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপকে। লাঞ্চের আগে সালমান আঘাকে সঙ্গে নিয়ে যোগ করেন ৩৬ রান।

৫৫ রানের ওই পার্টনারশিপ পাকিস্তানকে এগিয়ে দিচ্ছিল। এরপরেই আবার আঘাত হানলেন হাসান মাহমুদ। দুই বলে ফেরালেন মোহাম্মদ রিজওয়ান আর মোহাম্মদ আলীকে। হাসান মাহমুদের বলে মোহাম্মদ রিজওয়ান আউট। গুড লেন্থে পড়া বলটি অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। ড্রাইভ করতে গিয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন ৪৩ রান করা রিজওয়ান। রিজওয়ানের পরের বলে মোহাম্মদ আলীও আউট। স্লিপে তার ক্যাচ নিয়েছেন নাজমুল হোসেন।

নাহিদ রানা আবরার আহমেদকে ফেরান গুডলেন্থের বলে। শেষ উইকেটে সালমান আঘা নতুন করে পরীক্ষা নিলেন বাংলাদেশের বোলারদের। শেষ উইকেটে মির হামযাকে নিয়ে গড়লেন ২৭ রানের জুটি। তাতেই বাংলাদেশের সামনে টার্গেট হয় ১৮৫।