সীমান্তে ফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছিল বিএসএফ, বিজিবির বাধা

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের উচনা ঘোনাপাড়া সীমান্তে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করে। পরে বিজিবির বাধার মুখে বিএসএফের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে আবার একই উপজেলার সোনাতলা সীমান্তের কিছু অংশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে বিএসএফ। বিষয়টি জানতে পেরে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিয়েছেন। বাধার পর কাজ বন্ধ রেখেছেন বিএসএফ সদস্যরা। পরে দুপুরে বৈঠকও করেছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত সীমান্তের গয়েশপুর ও বাংলাদেশ সীমান্তের সোনাতলা অংশে কাঁটাতারের বেড়া নেই। গত কয়েকদিন ধরে এই অংশের মেইন পিলার ২৮০ নম্বরের সাব পিলার ১২ ও ১৩ নম্বরের ভারতের অভ্যন্তরে ৫ থেকে ১০ গজের ভেতরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য অল্প অল্প স্থানে বিএসএফ সদস্যরা দিনে পরিষ্কার করেন, আর রাতে ওই অংশে বেড়া দেন। এভাবে দুটি সাব পিলার অংশে তারা বেড়া দিয়ে ফেলেন। স্থানীয়রা বিজিবিকে বলার পর সেখানে বাধা দেওয়া হয়। এরপর বিএসএফ কাজ বন্ধ রাখেন। ঘটনাটি নিয়ে দুপুরে ২৮০ মেইন পিলারের ১৫ নম্বর সাব পিলারে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বৈঠক করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দারা বাংলাদেশ সীমান্তের জমির আইল, পুকুরের পাড়ে বসে রয়েছেন। আর বিজিবি সদস্যরা ধানখেতের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। হাটখোলা বিওপি কমান্ডারসহ বিজিবির কয়েকজন সদস্য বৈঠকের জন্য সাব পিলার ১৫ নম্বরে গিয়েছেন। সেখানে ভারতের গয়েশপুর ক্যাম্পের বিএসএফ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হয়। দুপুর ১২টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠক ১টা পর্যন্ত চলে। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ২০ বিজিবির জয়পুরহাট ব্যাটালিয়নের হাটখোলা বিওপির কমান্ডার সাইদুল বারী।

সোনাতলা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহজাহান বলেন, চার-পাঁচ দিন ধরে তারা (বিএসএফ) এসব ঘিরিচ্ছে (বেড়া দেওয়া)। তারা দিন করে জঙ্গল (আগাছা) কাটে, আর রাত করে ওই জায়গাতে ঘিরে। পরে বিজিবি নিষেধ করার পরে আজ বৈঠকে বসেছিল। বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটি জানি না।

আরেকজন বাসিন্দা কামরুজ্জামান বলেন, তারা (বিএসএফ) কি আন্তার্জাতিক সীমানা মানবে না? তারা জোড় করে এসব করতেছে। আমরা এই বিষয়টি দেখার জন্য ডিজি (বিজিবির মহাপরিচালক) মহোদয়ের কাছে অনুরোধ জানাই।

আরিফুল ইসলাম নামে একজন বলেন, বিজিবি গতকাল বাধা দিয়েছিল। রাতে কাজ বন্ধ থাকার পর সকালে আবার কাজ করা হয়। পরে বিজিবি বাধা দিয়েছে। এরপর তারা বৈঠক করেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য লাইজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পর বিজিবিকে জানানো হলে গতকাল (শনিবার) বাধা দেয়। পরে আজ সকালে আবার কাজ করে। এরপর বিজিবি এসে বাধা দিয়ে তাদের (বিএসএফ) সঙ্গে বৈঠক করেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সীমানার ১৫০ গজের মধ্যে ঘেরা যাবে না। কিন্তু তারা সেটি মানছে না।

জানতে চাইলে ২০ বিজিবির জয়পুরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ নেওয়াজ বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমরা বাধা দিয়েছি। তারা কাজ স্থগিত রেখেছে। তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে, আর কাজ করবে না। আর যে অংশে কাজ করেছে সেটি তুলে নিয়ে যাবে।