সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে: রাশেদ খান

সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো, বিতর্কিত করার চেষ্টা যারা করছে, তারা মূলত আরেকটি ১/১১ ফিরিয়ে আনতে চায়। তিনি বলেন, ‘১/১১ আসলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এদেশের রাজনৈতিক দল। কোনোভাবেই আরেকটি ১/১১ বাংলাদেশে আনা যাবে না।’

শনিবার (২২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আ.লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান বলেন, ‘এই যে আমাদের সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো ষড়যন্ত্র চলছে। এই গণঅভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর কি কোনও ভূমিকা নেই? সেনাবাহিনী যদি ভূমিকা না রাখতো, তাহলে কোনও গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশে হতো না। যখন সেনাবাহিনী বন্দুকের নল আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট পুলিশের দিকে তাক করেছে, তখনই হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা কয়েকটি দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হলো, গণহত্যার বিচার করতে হবে। প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার করা এবং নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করা। নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করলে জনগণ মানবে না। সংস্কারের এক নম্বর উপাদান হলো নির্বাচন। সেই নির্বাচনের কথা আসলেই, উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়। তারা ক্ষমতার লোভে পড়েছে। তারা মনে করছে, ধানাই-পানাই করে ক্ষমতায় থাকবে। এই ধানাই-পানাই করে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনও ক্ষমতায় থাকার চেষ্টার করেছিল। কিন্তু, পারেনি। দেশের জনগণ তাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে। এই উপদেষ্টা পরিষদের যারা আ.লীগকে পুনর্বাসন করতে চান, তারা ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনকে দেখে শিক্ষা নেন। শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিক্ষা নেন।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক উপদেষ্টা কী কাজ করেন আমরা জানি না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা আসলেই দাফতরিক কাজ করছে কিনা, আমরা জানি না। অনেকের নামও আমাদের জানা নেই। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এখানও পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে পারেনি। চোরগুলো (আ.লীগের নেতারা) যখন ভারত, ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডায় পালিয়ে গেছে, তখন তারা অপারেশন ডেভিল হান্ট ঘোষণা করেছে। একটা ডেভিলও ধরা পড়েনি। ডেভিল সাবের ও মান্নানকে আমাদের দুজন উপদেষ্টা জামিন করিয়েছেন। তারা হলেন, উপদেষ্টা আদিলুর রহমান শুভ্র এবং রেজওয়ানা চৌধুরী। এখনও শোনা যাচ্ছে, এই সাবের নাকি ক্লিন ইমেজের আ.লীগের সভাপতি হবেন।’

গণহত্যার বিচারের আগে দেশে আ.লীগ নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের নেতা বলেন, ‘আ.লীগ যারা করেছে, তাদের মধ্যে ভালো মানুষ কয়জন ছিল? তাদের আবার কীসের ক্লিন ইমেজ? আমরা তারপরও বলেছি, যারা সাধারণ ও নিরীহ ছিল, যারা সরাসরি ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালইনি, তাদের ওপর আমরা জুলুম করবো না। তবে, গণহত্যার বিচারের পর আমরা তাদেরকে ছাড় দেবো এবং মাফ করবো। গণহত্যার বিচার শেষ হওয়ার আগে যতই ক্লিন ইমেজ হোক না কেন, বাংলার মাটিতে আ.লীগের নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। যারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করতে আসবে, জনগণ তাদেরকে প্রতিহত করবে।’

তিনি বলেন, প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন) ঘেরাও করা হবে। আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ করতে বাধ্য করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল, বিশেষ করে সমন্বয়ক নামধারী যাদের নাম পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে, তার মধ্যে ওয়াসা কেলেঙ্কারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি কেলেঙ্কারি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি উঠে আসছে। আমরা তাদের এগুলো দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। আমরা মনে করেছিলাম— তারা আবাবিল পাখি। ওরা নেতৃত্ব দিয়েছে, ওদেরকে দেবতার মতো শ্রদ্ধা জানাতে হবে। কিন্তু, সেই জায়গাটি তারা ধরে রাখতে পারেনি।’