হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব স্থায়ী সমাধানে কাজ করছে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্ট

হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে সরকার স্থায়ী সমাধানের পথে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, এজন্য আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।

সোমবার (২৬ মে) শেরপুরের মধুটিলা ইকোপার্কে হাতি-মানুষ দ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, মানুষ হাতির আবাসস্থল দখল করে নিচ্ছে, ফলে হাতির খাবার কমে যাচ্ছে। ইউক্যালিপটাসসহ বিদেশি গাছ না লাগিয়ে আমাদের হাতির উপযোগী দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগাতে হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, হাতির জীবনও গুরুত্বপূর্ণ, মানুষের জীবনও। বন ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকার জনগণের প্রতিপক্ষ নয়, বরং সহায়ক। প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হলে আমরাও নিরাপদ থাকবো না। বাণিজ্যিক গাছের পরিবর্তে প্রাকৃতিক গাছ রোপণ করতে হবে।

এ সময় হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নেরও নির্দেশ দেন তিনি।

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান। এ সময় শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, কেন্দ্রীয় বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্লাহ পাটওয়ারী, বিজিবি কমান্ডার লে. কর্নেল তানভির হোসেন মজুমদার, ইআরটির সদস্য ইমতিয়াজ আলী ও মোহাম্মদ হাসমত আলী উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে হাতির আক্রমণে নিহত দুই পরিবারকে মোট ৬ লাখ টাকা ও ফসল-ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫ পরিবারকে ৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা প্রদান করেন উপদেষ্টা। এছাড়া অ্যালিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যদের মাঝে বাইনোকুলার, টর্চলাইট, হ্যান্ডমাইক, হুইসেলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।

এর আগে উপদেষ্টা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্র এবং মধুটিলা রেঞ্জের ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাগান প্রকল্প পরিদর্শন করেন।

২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাতি-মানুষ দ্বন্দ্বে নিহত ৪৫ জনের পরিবারকে মোট ৯১ লাখ টাকা, আহত ৩৪ জনকে ১০ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং ৯০৬ জনের ফসল ও ঘরবাড়ি ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ কোটি ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। মোট ক্ষতিগ্রস্ত ৯৮৫ জনকে দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ২৫ হাজার টাকা।