হার্ভার্ডের আরও ৬০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নাগরিক অধিকার রক্ষায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগ (এইচএইচএস) ঘোষণা করেছে— তারা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান বাতিল করছে। স্থানীয় সময় সোমবার এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এইচএইচএস-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নাগরিক অধিকার রক্ষায় আমরা দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “হার্ভার্ড বারবার অ্যান্টি-সেমিটিক (ইহুদিবিরোধী) হয়রানি এবং বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ায়, তাদের বহু বছর মেয়াদি কয়েকটি অনুদান বাতিল করা হয়েছে, যার মোট পরিমাণ প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলার।”

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তারা কোনও ধরনের বৈষম্য মেনে নেবে না এবং ফেডারেল তহবিল কেবল সেই প্রতিষ্ঠানগুলোই পাবে, যারা সব শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিত করে।

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত আরও ২২০ কোটি ডলারের বেশি ফেডারেল অনুদান এবং ৬০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তির অর্থ ফ্রিজ করে। প্রশাসনের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ এবং ডাইভার্সিটি, ইক্যুইটি ও ইনক্লুশন (ডিইআই) কর্মসূচির কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

হার্ভার্ড প্রশাসন অবশ্য এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির অভিযোগ, এই অর্থ অবরোধ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট (মতপ্রকাশের স্বাধীনতা) এবং একটি ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন— যেখানে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস)-কে কোনও অডিট বা তদন্ত শুরু কিংবা বন্ধ করার নির্দেশ দিতে পারবেন না।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব তহবিল থেকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে গবেষণা সহায়তা চালিয়ে যাবে।

এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ও মার্কিন প্রশাসনের নজরে রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে— যারা ‘বর্ণবাদবিরোধী’ নীতিমালা ও ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকে প্রশ্রয় দিচ্ছে—তাদের ওপর কঠোর আর্থিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও গবেষণার ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন তুলছে।