‘১০ টাকার ইট এখন আর ১০০ টাকায় কেনা যাবে না’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘১০ টাকার ইট ১০০ টাকায় কেনা যাবে না। অতীতে যা করেছেন তা একেবারে ভুলে যান। এটা নতুন একটা বাংলাদেশ, এটা পরিবর্তিত দেশ। আমাদের আর কোনো দেশ নেই, উত্তরে কাঁটাতারের বেড়া দক্ষিণে সমুদ্র। আমাদের দেশকে আমাদেরকেই গড়ে তুলতে হবে। এটাই সুযোগ। এটা হারানো যাবে না।’

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুমিল্লায় সাম্প্রতিক অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় চলমান ত্রাণ কার্যক্রমসহ বন্যার্তদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, তরুণ অফিসারদের মেধার সর্বোত্তম বিকাশ আমরা দেখতে চাই। প্রচলিত ধারার পুনর্বাসন কর্মসূচি আপনারা গ্রহণ করবেন না। বালির বাঁধ দেবেন, আবার যাবে ফের বালির বাঁধ দেবেন। যারা ইঞ্জিনিয়ার আছেন তারা আপনাদের জ্ঞানের সর্বোত্তম বিকাশ করবেন। আপনাদের কাজ সব সময় নজরদারিতে রাখা হবে, জনগণও তা দেখতে পাবে।

তিনি বলেন, একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা আজকে দুর্যোগ মোকাবিলা করছি। সারাদেশের মানুষ ছুটে আসছেন ত্রাণ নিয়ে, সরকারি কর্মকর্তারা একা নন। আপনারা উপলব্ধি করতে পেরেছেন? মানুষ আমাদের শক্তি জুগিয়েছে। কর্মকর্তারা বোঝতে পেরেছেন, মানুষের শক্তি কী জিনিস। কোনো অবস্থাতেই পূর্বের সময়ে আর ফিরে যাওয়া যাবে না।

পুনর্বাসন পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে ত্রাণ এবং পুনর্বাসন সমন্বয় কমিটি হবে। এই কমিটিতে ছাত্র, নাগরিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্রঋণসহ সর্বতোভাবে যাদের যাদের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন তাদের নিয়ে কমিটিগুলো করা হবে। মাঠপর্যায় থেকে এটা তৈরি করা হবে। ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যক্রম সমন্বয় কমিটি মানুষের চোখের সামনে বাস্তবায়ন করবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আর কোনো দোহাই দিতে পারবেন না।

উপদেষ্টা বলেন, এখানে সব সময় মানুষ চোখ রাখছে। আমাদের সন্তানসহ নিজেদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ জীবন চাই। দাসত্বের জীবনে আর যেন ফিরে যেতে না হয়। আমরা কোনো দল, সংস্থা বা সংগঠনের দাস হতে চাই না। এটা আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র। প্রতিটি নাগরিক এটি উপলব্ধি করতে চাই। মানুষের কাছে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রশাসনিকভাবে যত সংস্কার প্রয়োজন এটা আমরা করে যাব। এটা আমরা একা করব না, আপনাদের সহযোগিতায়ই করা হবে। আমরা সবাই মিলে করব।

সভায় সেনাবাহিনী, পুলিশি, বিজিবি, র‌্যাব, কৃষি ও মৎস্য বিভাগ, এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ, সিভিল সার্জন, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, ছাত্র প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।