দেশের শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন সময়কালে ১৫ কোটি টাকার নিট মুনাফা অর্জন করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫.৩ শতাংশ বেড়েছে। বিনিয়োগ আয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে।
আইপিডিসি’র অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীতে দেখা গেছে, ২০২৫ এর জানুয়ারি থেকে জুন-এ তাদের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৩৭ টাকা, যা ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ছিল ০.২৫ টাকা। ছয় মাসে মোট সুদ আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৯ শতাংশ বা ৪৬৪ কোটি ৩ও লক্ষ টাকা। তবে, একইসময়ে সুদের ব্যয় ২২.৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ কোটি টাকায়। এর মূলে ছিল আমানতের উচ্চ-খরচ ও গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক নীতিগত সুদহার বৃদ্ধি এবং অস্থিতিশীল সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট। তবে, সুদের খরচ ২২.৮% বৃদ্ধি পেয়ে ৩,৬৯০ মিলিয়ন টাকা হয়েছে, অন্যদিকে, ট্রেজারি বিনিয়োগ ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে আয় ১৫৮.৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। তবে, আমানতের উচ্চ-খরচের কারণে পরিচালন আয় ৪.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০ কোটি ১০ লক্ষ টাকায়। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পরিচালন আয় দাঁড়িয়েছে ৮৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা, যা গত বছর একই সময়ের তুলনায় ১১.৪% বেশি।
সম্পদের দক্ষ ব্যবহার, নিয়ন্ত্রিত নিয়োগ এবং পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আইপিডিসি পরিচালন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে, যা ৫.০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকায়। ফলে, বছরের প্রথমার্ধে পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৮২ কোটি টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় ৩.২ শতাংশ বেশি দেখাচ্ছে। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে, ২০২৫ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা, যা আগের প্রান্তিকের চেয়ে ১৯.৫% বেশি।
ফলে, কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি টাকায়, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫.৩ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, প্রান্তিক ভিত্তিতে (এপ্রিল–জুন ২০২৫) কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায়, যা গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৩৩.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিজওয়ান দাউদ সামস বলেন, “২০২৫ সালের প্রথমার্ধে আমাদের পারফর্ম্যান্স একটি স্থিতিশীল ও ভবিষ্যতমুখী আর্থিক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠার আমাদের চেষ্টাকে তুলে ধরেছে। প্রতিকূল অর্থনৈতিক পরিবেশ ও ব্যয় বৃদ্ধির মাঝেও আমাদের ট্রেজারি দক্ষতা, ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা এই সাফল্য এনে দিয়েছে বলে আমি মনে করি।”
২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত আইপিডিসি’র ঋণ, লিজ ও বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮,৪৩৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা, যা গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় ৬.৮ শতাংশ বেশি। এ সময়ে, ট্রেজারি বিনিয়োগ পোর্টফোলিও ৩৬.৪ শতাংশ বেড়েছে, যদিও ঋণ ও অগ্রিম বাবদ ২.৭ শতাংশ বেড়েছে। গ্রাহকদের আস্থা তুলনামূলকভাবে দুর্বল থাকা সত্ত্বেও, আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,৬৬৪ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায়, যা ২০২৫ এর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৯.৪ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়া, আইপিডিসি’র শেয়ারপ্রতি নেট অ্যাসেট ভ্যাল্যু (এনএভি) জুন ২০২৫-এ দাঁড়িয়েছে ১৬.৭৯ টাকা। শেয়ারপ্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৫৩ টাকায়, যেখানে গত বছর এর পরিমাণ ছিল (৯.২৯) টাকা।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ