আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ, একটি জাতীয় সরকার গঠন, হাসিনার দোসরদের গ্রেপ্তার এবং বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। একইসঙ্গে আগামী ৬ এবং ১০ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে দেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের জেলা, উপজেলা থানা পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৬ মাস পার হয়ে গেলেও হাসিনার দোসরদের এখনও বিচার করা হয়নি। আমরা দেখতে পাচ্ছি বিপ্লবী দরের ওপর হামলা করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়, হত্যার হুমকি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনগুলো। সেই সঙ্গে কর্মসূচি ঘোষণা করার সাহস পাচ্ছে তাদের বিচারের আওতায় না আনতে পারায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য ব্যর্থতা। আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া প্রশাসনের মাধ্যম দেশ পরিচালনা করা দেশের মানুষের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় ছিল যারা আন্দোলনে আহত হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের পুনর্বাসন করা, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ কাজে পুরোপুরি ব্যর্থ, কারণ আহতদের এখন চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের জন্য রাজপথে নামতে হচ্ছে। সামান্য সহযোগিতার জন্য আন্দোলন করা এই সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় লজ্জা এবং ব্যর্থতা।
তিনি আরও বলেন, বিপ্লবকে রক্ষা করার জন্য বর্তমান সরকারকে জরুরি দিক নির্দেশনা দিতে আমরা সংবাদ সম্মেলন করছি। জুলাই বিপ্লবের ৬ মাস পার হওয়ার পরেও আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে খুনিদের গ্রেপ্তার এবং বিচারের জন্য।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, হাসিনাকে সাহায্য করা প্রশাসন আমলাতন্ত্রে আওয়ামী লীগের কতজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছেন? আমাদের কুকুরের মতো যারা পিটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? হাসিনাকে যে-সব ব্যবসায়ীরা প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করেছে তাদের সঙ্গে আপনারা সমঝোতা করছেন। প্রশাসন আওয়ামী লীগকে নানা ভাবে শেল্টার দিচ্ছে এটা আমাদের জন্য অশনি সংকেত।
এরপর বিন ইয়ামিন মোল্লা দাবি তোলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগের সব প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা না হলে ছাত্র অধিকার পরিষদ সচিবালয় অভিমুখে লং মার্চ করবে। ইতোমধ্যে ৫৭২ জন্য আওয়ামী দোসরকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এটা সংস্কারের নমুনা হতে পারে না। যে বিচারকরা জামিনের রায় দিয়েছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে- ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ঢাবি শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।