রাজধানীর বাজারে কমতে শুরু করেছে মৌসুমি ফলের দাম। আম, লিচু আর জাম— এই তিনটি ফলের বাজারে এখন ক্রেতাদের জন্য রয়েছে স্বস্তির হাওয়া। আকার ও মানভেদে সর্বনিম্ন ৬০-৮০ টাকা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে আম। অথচ মৌসুমি এই রসাল ফলের দাম কয়েক সপ্তাহ আগেও ছিল ১০০ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত। একইসঙ্গে ঈদের আগে যেসব বড় লিচু ৫০০-৬৫০ টাকা প্রতি শ বিক্রি হয়েছে তার দামও এখন ৩০০-৩৫০ টাকায় নেমেছে। আর ২৫০ টাকা কেজি দামের জাম এখন পাওয়া যাচ্ছে ১২০ টাকায়।
শনিবার (১৪ জুন) রাজধানীর উত্তরার আজমপুর ও খিলক্ষেত বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমের দাম প্রতি কেজিতে ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। একইভাবে লিচু ও জামেও দাম কমেছে। ফলে আম কিনতে এখন ভিড় করছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
আরও পড়ুন:দাম কমেছে সবজি-মুরগির, মাছের বাজার চড়া
বিক্রেতারা জানান, বাজারে আমের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে এসেছে। এরমধ্যে হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, আম্রপালি, জাতের আম বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৬০ থেকে শুরু করে ১২০ টাকার মধ্যে।
খিলক্ষেত বাজারে আম বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী আবদুল করিম। তিনি বলেন, সপ্তাহ দুই আগেও হিমসাগর বিক্রি করেছি ১২০-১৩০ টাকায়। এখন সেটা ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আমের জোগান অনেক বেশি, তাই দাম কমতে শুরু করেছে।
আজমপুর বাজারের আরেক ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, চাষিরা এবার আগেভাগেই প্রচুর আম পাঠাচ্ছেন ঢাকায়। ফলে আম এখন ৬০-৭০ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতারাও খুশি, আমরাও ভালো বিক্রি করতে পাচ্ছি।
আবার এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, জাতভেদে আমের দাম এখন প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০ টাকার মধ্যে। বিশেষ করে ছোট সাইজের আম পাওয়া যাচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। মাঝারি মানের গোপালভোগ ও আম্রপালি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়, আর বড় আকারের ল্যাংড়া বা হিমসাগর মিলছে ১০০-১২০ টাকায়।
অন্যদিকে, লিচু ও জামের দমও কম। ঈদের আগে প্রতি ১০০ বড় লিচু বিক্রি হয়েছে ৫০০-৬৫০ টাকায়। এখন সেই দাম নেমে এসেছে ৩০০-৩৫০ টাকায়। মান ও আকার অনুযায়ী ছোট লিচুর দাম আরও কম, প্রতি শ ২০০-২৫০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে।
উত্তরার খুচরা বিক্রেতা রশিদ মিয়া বললেন, ঈদের সময় দাম ছিল অনেক বেশি। এখন লিচুর মৌসুম পুরোদমে চলছে, তাই দামও কমে গেছে। তবে এখন মানুষও আগের চেয়ে বেশি কিনছে।
এছাড়া কিছুদিন আগেও যে জাম বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০০-২৫০ টাকায়, এখন সেই জাম ১২০-১৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। রং, আকার ও স্বাদে এখনকার জাম অনেক ভালো বলে জানাচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
মৌসুমি এসব ফলের দাম হাতের নাগালে থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন ক্রেতারাও। খিলক্ষেত রাজাবাজারে ফল কিনতে আসা চাকরিজীবী রাবেয়া সুলতানা বলেন, ঈদের আগে আমের দাম বাড়তি ছিল। এখন দাম অনেক সহনীয়, আমি আজ দুই কেজি হিমসাগর নিয়েছি ১৬০ টাকায়।
তৌহিদুল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, লিচুর দাম এখন হাতের নাগালে। জামও আগের চেয়ে অনেক সস্তা। একসঙ্গে তিন রকম ফল কিনে বাসায় নিতে পারছি।
আর ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন, উত্তরবঙ্গ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ট্রাকে করে ঢাকায় আসছে হাজার হাজার মণ আম। এছাড়া লিচু আসছে দিনাজপুর, যশোর ও নরসিংদী অঞ্চল থেকে। জামও আসছে নেত্রকোনা ও টাঙ্গাইল থেকে।
ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আগামী ১০-১৫ দিন দাম আরও কিছুটা কমতে পারে। তবে বৃষ্টি বা পরিবহন জটিলতা দেখা দিলে আবার দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেক ব্যবসায়ী।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।