জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয়ে মর্টগেজ সম্পত্তিকে অতিমূল্যায়িত করে বন্ডের বিপরীতে বিনিয়োগকারীর ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামসহ ৩০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, তার ছেলে আইএফআইসির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, ব্যাংকটির সাবেক এমডি মো. শাহ আলম সারোয়ার, ব্যাংকটির সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক সুধাংশু শেখর বিশ্বাস, এ আর এম নাজমুস সাকিব, কামরুন নাহার আহমেদ, সাবেক পরিচালক রাবেয়া জামালী, গোলাম মোস্তফা, মো. জাফর ইকবাল, আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ ক্রেডিট অফিসার সৈয়দ মনসুর মোস্তফা, হেড অব লোন পারফর্মেন্স ম্যানেজমেন্ট শাহ মো. মঈনউদ্দিন, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, গীতাঙ্ক দেবদীপ দত্ত, মো. নুরুল হাসনাত ও মনিতুর রহমান, ব্যাংকটির হেড অব ট্রেজারি মোহাম্মদ শাহিন উদ্দিন, ধানমন্ডি শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক ও এফভিপি নাজিমুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপক হোসাইন শাহ আলী, রিলেশনশিপ ম্যানেজার সরদার মো. মমিনুল ইসলাম, এসপিও আয়েশা সিদ্দিকা এবং এফএডিপি সিলভিয়া চৌধুরী।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম, বিএসইসির সাবেক কমিশনার রুমানা ইসলাম, মিজানুর রহমান, শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও মো. আবদুল হালিম।
এছাড়া সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিমাই কুমার সাহা, কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান এবং শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মশিউজ্জামান ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক তিলাত শাহরিনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয়ে সিআইবি প্রতিবেদন সংগ্রহ না করেই; প্রস্তাবিত মর্টগেজ সম্পত্তি সরেজমিনে পরিদর্শন বা মূল্য যাচাই না করেই অস্বাভাবিক অতি মূল্যায়ন করে ৮৭ কোটি টাকার জমিকে ১ হাজার ২০ কোটি টাকায় মূল্যায়ন করেছে।
অন্যদিকে অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মালিকানাধীন মাসখানেক আগে রেজিস্ট্রিকৃত কথিত কোম্পানির তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বন্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করে শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেডের চলতি হিসাবে জমা করে। সেখান থেকে রিডেশন রাউন্ডে ২০০ কোটি টাকার এফডিআর করে অবশিষ্ট ৮০০ কোটি টাকা (সরকারি অর্থ) বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডসহ বেক্সিমকো গ্রুপ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করে এবং ব্যাংকিং নিয়মাবলী উপেক্ষা করে নগদে ও বিভিন্ন রকম সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে তা আত্মসাৎ করেছে। আত্মসাৎ করা অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭৫/১০৯ তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারার এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে আসামিরা।