তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ যেই মতাদর্শ দিয়ে রাজনীতি করেছে, যে প্রক্রিয়ায় রাজনীতি করেছে, তাতে আওয়ামী লীগ আর কখনোই বাংলাদেশে রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না। যদি আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসে, তা গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল হবে। অবশ্যই আমরা আমাদের জীবন থাকতে তা হতে দেব না।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখা ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পদত্যাগ করেননি, এটা আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট। তার পতন হয়েছে, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে বাংলাদেশের ছাত্র জনতা। যে দলকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার থাকবে কিনা, এ নিয়ে কোনো দ্বিধার অবকাশ নেই। আমরা যদি বলি আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট দল, তাহলে একটি ফ্যাসিস্ট দল গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কীভাবে রাজনীতি করতে পারে?
তিনি আরও বলেন, বিগত ওয়ান-ইলেভেনের সময় থেকে ফ্যাসিবাদের সূত্রপাত ঘটে। সেই সময় থেকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের পর থেকে ছাত্র নেতৃত্ব গড়ে উঠেছে জুলাই আন্দোলনের। সরকার এটিকে রাজনৈতিকভাবে দমন করতে চেয়েছিল। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ নিহত হলে জনগণ রুখে দাঁড়ায়। যখন আমাদের ‘রাজাকার’ বলা হয়, তখন শিক্ষার্থীদের আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। ফলে আমরা যে লড়াই করেছি, তা আমাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াই।
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে পাওয়া অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে তুলনা করছেন। আমি মনে করি এটি সম্পূর্ণ ভুল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করে এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনপ্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু এবারকার সরকার গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণে সংস্কার করে যেতে না পারলে, আমাদের গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা মসৃণ হবে না। তাই আমাদের কিছু মৌলিক সংস্কার করতে হবে।
আলোচনা সভায় জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।