আচরণবিধি ভঙ্গ করায় যুক্তরাজ্যে ৬০০ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

আচরণবিধি ভঙ্গ করায় যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রায় ৬০০ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একের পর এক কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর পুলিশের ওপর সাধারণ জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান কলেজ অব পুলিশিংয়ের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্রিটিশ পুলিশের ৪৩টি ইউনিটের ৫৯৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন অথবা পুনরায় কাজ যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। কলেজ অব পুলিশিং প্রকাশিত এই পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বরখাস্ত হওয়া পুলিশের সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ৭৪ জন যৌন অপরাধ ও অসদাচরণের জন্য এবং ১৮ জন শিশু পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তবে বরখাস্ত করার প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ‘অসততা’—যেখানে এমন ঘটনা ঘটেছে ১২৫ টি। অপর একটি বড় কারণ হলো—বৈষম্যমূলক আচরণ। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ৭১ টি।

যুক্তরাজ্যে পুলিশ সদস্যদের বরখাস্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা নানাভাবে পুলিশের ওপর জনসাধারণের বিশ্বাস ও আস্থা পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করছেন। ২০২১ সালে ৩৩ বছর বয়সী মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ সারাহ এভারার্ডকে অপহরণ এবং হত্যার ঘটনায় লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়েন কাউজেন দোষী সাব্যস্ত হন। এরপর থেকে ব্রিটিশ পুলিশ অসদাচরণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

গত বছর, আরেক মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তা ডেভিড ক্যারিককে ১২ জন নারীর বিরুদ্ধে একাধিক ধর্ষণ ও যৌন অপরাধের জন্য ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কলেজ অব পুলিশিংয়ের অপারেশনাল স্ট্যান্ডার্ডের পরিচালক সহকারী প্রধান কনস্টেবল টম হার্ডিং বলেছেন, বরখাস্তকৃত কর্মকর্তাদের আচরণ ‘খুব হতাশাজনক।’

হার্ডিং আরও বলেন, ‘তবে আশার বিষয় হলো—এই পরিসংখ্যানগুলো আমাদের দেখায় যে, আমাদের কাছে কার্যকর ও শক্তিশালী ব্যবস্থা আছে, যা আমাদের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের দ্রুত চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্ষম কর তোলে। যাতে তারা ভবিষ্যতে পুলিশের কোনো পদে থাকতে না পারে তা আমরা এর মাধ্যমেই নিশ্চিত করছি।’ তিনি বলেন, ‘এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে, পুলিশে উচ্চ মানদণ্ডে ব্যর্থদের কোনো জায়গা নেই।’