বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় জড়ানো থাকে কেন?

সব সময় যে বাড়িতে রান্না করা বিরিয়ানি খাওয়া হয়, এমন তো নয়। বরং বিরিয়ানি এমন একটি খাবার যা বাইরে খেতেই বেশি মজা লাগে। যদিও তা বাড়িতে তৈরি বিরিয়ানির মতো স্বাস্থ্যকর কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। সে প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। আপনি যখন বিরিয়ানি কিনতে যান, নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, দোকানের সামনে রাখা বিরিয়ানির হাঁড়ির গায়ে লাল কাপড় জড়ানো রয়েছে? কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে এই লাল কাপড় জড়িয়ে রাখার কারণ কী হতে পারে? যদি বিরিয়ানি খেতে ভালোবাসেন, তবে জেনে নিন বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় জড়িয়ে রাখার ইতিহাস-

লাল রংকে সব সময়েই আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। বিশেষ কোনো অতিথিকে বরণ করার জন্য পাতা হয় লাল গালিচা।অনেকে বিশ্বাস করেন, বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল রঙের কাপড় বাঁধা হয় ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। কিন্তু এই ধারণা মোটেই ঠিক নয়। বরং এর পেছনে জড়িয়ে অন্য ইতিহাস।

সাম্রাজ্য হারিয়ে মুঘল সম্রাট হুমায়ুন যখন ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন তখন তাঁকে পারস্য সম্রাট লাল গালিচার উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে ছিলেন। তখন সম্রাট হুমায়ুনকে খাদ্য পরিবেশনের সময় রুপালি পাত্রের খাবারগুলো লাল কাপড়ে ঢেকে ও চিনামাটির খাবারগুলো সাদা কাপড়ে ঢেকে তার কাছে নিয়ে আসা হতো পরিবেশনের জন্য। এই ব্যবস্থা সম্রাট হুমায়ুনকে মুগ্ধ করে।

পরবর্তীতে মুঘল সম্রাজ্যেও এই রীতি চালু করেন তিনি। এরপর লখনৌ শহরের নবাবরাও খাবার পরিবেশনের এই প্রথা ও রঙের ব্যবহার করা শুরু করে দেন। মূলত রাজকীয় ও দামী খাবার বোঝানোর জন্যই বিরিয়ানির হাঁড়ির গায়ে লাল কাপড় জড়িয়ে রাখার চল শুরু হয় তখন থেকে।

বিরিয়ানি এখনও অভিজাত খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। এর হাড়ির গায়ে লাল কাপড় জড়ানোর আসল কারণ জানা না থাকলেও সাধারণ মানুষ দূর থেকে লাল কাপড় দেখেই বুঝে যান কোথায় রয়েছে বিরিয়ানির দোকান। এরপর পছন্দের দোকান থেকে পছন্দের বিরিয়ানি কিনে খাওয়া আরও সহজ হয়ে যায়।